পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫১৮
গীতিমাল্য

উপহার

রাজপুরীতে বাজায় বাঁশি বেলাশেষের তান।
পথে চলি, শুধায় পথিক ‘কী নিলি তোর দান’।
দেখাব যে সবার কাছে এমন আমার কী বা আছে?
সঙ্গে আমার আছে শুধু এই কখানি গান।

ঘরে আমায় রাখতে যে হয় বহু লোকের মন—
অনেক বাঁশি, অনেক কাঁসি, অনেক আয়োজন।
বঁধুর কাছে আসা বেলায় গানটি শুধু নিলেম গলায়,
তারি গলার মালা করে করব মূল্যবান্।

শিলাইদহ
১৫ ফাল্গুন [১৩২০]


গানের পারে

দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ও পারে।
আমার সুরগুলি পায় চরণ, আমি পাই নে তোমারে। 
বাতাস বহে মরি মরি, আর বেঁধে রেখো না তরী,
এসো এসো পার হয়ে মোর হৃদয়-মাঝারে।

তোমার সাথে গানের খেলা দূরের খেলা যে—
বেদনাতে বাঁশি বাজায় সকল বেলা যে।
কবে নিয়ে আমার বাঁশি বাজাবে গো আপনি আসি
আনন্দময় নীরব রাতের নিবিড় আঁধারে?

শান্তিনিকেতন
২৮ ফাল্গুন ১৩২০


নিঃসংশয়

ওদের কথায় ধাঁদা লাগে, তোমার কথা আমি বুঝি।
তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, এই তো সবই সোজাসুজি।
হৃদয়-কুসুম আপনি ফোটে, জীবন আমার ভরে ওঠে—
দুয়ার খুলে চেয়ে দেখি হাতের কাছে সকল পুঁজি।