মঞ্জুলিকা বাপের সেবায় লাগল দ্বিগুণ ক’রে
অষ্টপ্রহর ধ’রে।
আবশ্যকটা সারা হলে তখন লাগে অনাবশ্যক কাজে—
যে বাসনটা মাজা হল আবার সেটা মাজে।
দু তিন ঘণ্টা পর
একবার যে ঘর ঝেড়েছে ফের ঝাড়ে সেই ঘর।
কখন যে স্নান, কখন যে তার আহার,
ঠিক ছিল না তাহার।
কাজের কামাই ছিল নাকো যতক্ষণ না রাত্রি এগারোটায়
শ্রান্ত হয়ে আপনি ঘুমে মেঝের ’পরে লোটায়।
যে দেখল সেই অবাক হয়ে রইল চেয়ে;
বললে, ‘ধন্যি মেয়ে।’
বাপ শুনে কয় বুক ফুলিয়ে, ‘গর্ব করি নেকো,
কিন্তু তবু আমার মেয়ে সেটা স্মরণ রেখো।
ব্রহ্মচর্যব্রত
আমার কাছেই শিক্ষা যে ওর, নইলে দেখতে অন্যরকম হত
আজকালকার দিনে
সংযমেরই কঠোর সাধন বিনে
সমাজেতে রয় না কোনো বাঁধ,
মেয়েরা তাই শিখছে কেবল বিবিয়ানার ছাঁদ।’
স্ত্রীর মরণের পরে যবে
সবেমাত্র এগারো মাস হবে,
গুজব গেল শোনা,
এই বাড়িতে ঘটক করে আনাগোনা।
প্রথম শুনে মঞ্জুলিকার হয় নিকো বিশ্বাস,
তার পরে সব রকম দেখে ছাড়লে সে নিশ্বাস।
পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৭০
পলাতকা