আমি ছিলাম ছাতে
তারায়-ভরা চৈত্রমাসের রাতে।
হঠাৎ মেয়ের কান্না শুনে, উঠে
দেখতে গেলেম ছুটে।
সিঁড়ির মধ্যে যেতে যেতে
প্রদীপটা তার নিবে গেছে বাতাসেতে।
শুধাই তারে, ‘কী হয়েছে বামী?’
সে কেঁদে কয় নীচে থেকে, ‘হারিয়ে গেছি আমি!’
তারায়-ভরা চৈত্রমাসের রাতে
ফিরে গিয়ে ছাতে
মনে হল আকাশ-পানে চেয়ে,
আমার বামীর মতোই যেন অমনি কে এক মেয়ে
নীলাম্বরের আঁচলখানি ঘিরে
দীপশিখাটি বাঁচিয়ে একা চলছে ধীরে ধীরে।
নিবত যদি আলো যদি হঠাৎ যেত থামি
আকাশ ভরে উঠত কেঁদে, ‘হারিয়ে গেছি আমি!’
ঠাকুরদাদার ছুটি
তোমার ছুটি নীল আকাশে, তোমার ছুটি মাঠে,
তোমার ছুটি থইহারা ওই দিঘির ঘাটে ঘাটে।
তোমার ছুটি তেঁতুল-তলায়, গোলাবাড়ির কোণে,
তোমার ছুটি ঝোপেঝাপে পারুল-ডাঙার বনে।
তোমার ছুটির আশা কাঁপে কাঁচা ধানের খেতে,
তোমার ছুটির খুশি নাচে নদীর তরঙ্গেতে।
আমি তোমার চশমা-পরা বুড়ো ঠাকুরদাদা,
বিষয়-কাজের মাকড়্ষাটার বিষম জালে বাঁধা।