পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
সঞ্চয়িতা

কবিতার রূপ পায় নি। ডিমের মধ্যে যে শাবক আছে সে যেমন পাখি হয়ে ওঠে নি এটাতে কেউ দোষ দেবে না, কিন্তু তাকে পাখি বললে দোষ দিতেই হবে।

 ইতিহাস-রক্ষার খাতিরে এই সংকলনে ওই তিনটি বইয়ের যে-কয়টি লেখা সঞ্চয়িতায় প্রকাশ করা গেল তা ছাড়া ওদের থেকে আর-কোনাে লেখাই আমি স্বীকার করতে পারব না। ভানুসিংহের পদাবলী সম্বন্ধেও সেই একই কথা। কড়ি ও কোমলে অনেক ত্যাজ্য জিনিস আছে কিন্তু সেই পর্বে আমার কাব্য-ভূসংস্থানে ডাঙা জেগে উঠতে আরম্ভ করেছে।

 তার পর মানসী থেকে আরম্ভ করে বাকি বইগুলির কবিতায় ভালাে মন্দ মাঝারির ভেদ আছে, কিন্তু আমার আদর্শ অনুসারে ওরা প্রবেশিকা অতিক্রম করে কবিতার শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে।

 এই গ্রন্থে যে কবিতাগুলি দিতে ইচ্ছা করেছি তার অনেকগুলিই দেওয়া হল না। স্থান নেই। ছাপা অগ্রসর হতে হতে আয়তনের স্ফীতি দেখে ভীতমনে আত্মসংবরণ করেছি।

 এ-রকম সংকলন কখনােই সম্পূর্ণ হতে পারে না। মনের অবস্থাপরিবর্তন হয়, মনােযােগের তারতম্য ঘটে। অবিচার না হয়ে যায় না।

 আমার লেখা যে-সকল কাব্যগ্রন্থ দীর্ঘকাল পাঠকদের পরিচিত এই গ্রন্থে তাদেরই থেকে বিশেষ করে সংগ্রহ করা হয়েছে। যেগুলি অপেক্ষাকৃত অপরিচিত সেগুলি যথাস্থানে পূর্ণতর পরিচয়ের অপেক্ষায় রইল।

 শান্তিনিকেতন। পৌষ ১৩৩৮