অতিথি
প্রবাসের দিন মোর পরিপূর্ণ করি দিলে, নারী,
মাধুর্যসুধায়; কত সহজে করিলে আপনারি
দূরদেশী পথিকেরে, যেমন সহজে সন্ধ্যাকাশে
আমার অজানা তারা স্বর্গ হতে স্থির স্নিগ্ধ হাসে
আমারে করিল অভ্যর্থনা। নির্জন এ বাতায়নে
একেলা দাঁড়ায়ে যবে চাহিলাম দক্ষিণগগনে
ঊর্ধ্ব হতে একতানে এল প্রাণে আলোকেরি বাণী;
শুনিনু গম্ভীর স্বর, ‘তোমারে যে জানি মোরা জানি।
আঁধারের কোল হতে যেদিন কোলেতে নিল ক্ষিতি
মোদের অতিথি তুমি, চিরদিন আলোর অতিথি।’
তেমনি তারার মতো মুখে মোর চাহিলে কল্যাণী,
কহিলে তেমনি স্বরে, ‘তোমারে যে জানি আমি জানি।’
জানি না তো ভাষা তব, হে নারী, শুনেছি তব গীতি—
‘প্রেমের অতিথি কবি, চিরদিন আমারি অতিথি।’
১৫ নভেম্বর ১৯২৪
শেষ বসন্ত
আজিকার দিন না ফুরাতে
হবে মোর এ আশা পুরাতে—
শুধু এবারের মতো বসন্তের ফুল যত
যাব মোরা দুজনে কুড়াতে।
তোমার কাননতলে ফাল্গুন আসিবে বারম্বার,
তাহারি একটি শুধু মাগি আমি দুয়ারে তোমার।
বেলা কবে গিয়াছে বৃথাই
এতকাল ভুলে ছিনু তাই।