কেন এ কে জানে, এত বর্ণ গন্ধ রসের উল্লাস—
প্রাণের মহিমাছবি রূপের গৌরবে পরকাশ।
যেদিন বিতানচ্ছায়ে মধ্যাহ্নের মন্দ বায়ে
ময়ুর আশ্রয় নিল, তোমারে তাহারে একখানে
দেখিলাম চেয়ে চেয়ে, কহিলাম ‘কেন এ কে জানে’।
অভ্যাসের-সীমা-টানা চৈতন্যের সংকীর্ণ সংকোচে
ঔদাস্যের ধুলা ওড়ে, আঁখির বিস্ময়রস ঘোচে।
মন জড়তায় ঠেকে নিখিলেরে জীর্ণ দেখে,
হেনকালে হে নবীন, তুমি এসে কী বলিলে কানে—
বিশ্ব-পানে চাহিলাম, কহিলাম ‘কেন এ কে জানে’।
আমি আজ কোথা আছি প্রবাসে অতিথিশালা-মাঝে।
তব নীললাবণ্যের বংশীধ্বনি দূর শূন্যে বাজে।
আসে বৎসরের শেষ, চৈত্র ধরে ম্লান বেশ,
হয়তো বা রিক্ত তুমি ফুল-ফোটাবার অবসানে—
তবু হে অপূর্ব রূপ, দেখা দিলে কেন যে কে জানে।
১৭ চৈত্র ১৩৩৩
উদ্বোধন
ডেকেছ আজি, এসেছি সাজি হে মোর লীলাগুরু—
শীতের রাতে তোমার সাথে কী খেলা হবে শুরু!
ভাবিয়াছিনু, গীতবিহীন
গোধূলিছায়ে হল বিলীন
পরান মম, হিমে-মলিন আড়াল তারে ঘেরি—
এমন ক্ষণে কেন গগনে বাজিল তব ভেরি?
উতরবায় কারে জাগায়, কে বুঝে তার বাণী,
অন্ধকারে কুঞ্জদ্বারে বেড়ায় কর হানি।