পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৫২
বিচিত্রিতা

চন্দনের গন্ধজলে মুছালো মুখখানি,
নয়নপাতে কাজল দিল আঁকি।
ওষ্ঠাধরে যতনে দিল রক্তরেখা টানি,
কবরী দিল করবীমালে ঢাকি।
ভূষণ যত পরালো দেহে তাহারি সাথে ব্যাকুল স্নেহে
মিলিল দ্বিধা, মিলিল কত ভয়।
প্রাণে যে ছিল সুপরিচিত তাহারে নিয়ে ব্যাকুল চিত
রচনা করে চোখের পরিচয়।

 ১৩ মাঘ [১৩৩৮]


ছায়াসঙ্গিনী

কোন্ ছায়াখানি
সঙ্গে তব ফেরে লয়ে স্বপ্নরুদ্ধ বাণী,
তুমি কি আপনি তাহা জান?
চোখের দৃষ্টিতে তব রয়েছে বিছানো
আপনা-বিস্মৃত তারি
স্তম্ভিত স্তিমিত অশ্রুবারি।

একদিন জীবনের প্রথম ফাল্গুনী
এসেছিল, তুমি তারি পদধ্বনি শুনি
কম্পিত কৌতুকী
যেমনি খুলিয়া দ্বার দিলে উঁকি,
আম্রমঞ্জরির গন্ধে মধুপগুঞ্জনে
হৃদয়স্পন্দনে
এক ছন্দে মিলে গেল বনের মর্মর।
অশোকের কিশলয়স্তর
উৎসুক যৌবনে তব বিস্তারিল নবীন রক্তিমা।
প্রাণোচ্ছ্বাস নাহি পায় সীমা