পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬৪
ছড়ার ছবি

শুরু হলে থামতে তাঁরে দিতেম না তো ক্ষণেক;
সত্যি মিথ্যে যা খুশি তাই বানিয়ে যেতেন অনেক।
ভূগোল হত উল্টোপাল্টা, কাহিনী আজগুবি—
মজা লাগত খুবই।
গল্পটুকু দিচ্ছি, কিন্তু দেবার শক্তি নাই তো
বলার ভাবে যে রঙটুকু মন আমাদের ছাইত।—

হুশিয়ারপুর পেরিয়ে গেল ছন্দৌসির গাড়ি,
দেড়টা রাতে সর্‌হরোয়ায় দিল স্টেশন ছাড়ি।
ভোর থাকতেই হয়ে গেল পার
বুলন্দশর, আম্লোরিসর্সার।
পেরিয়ে যখন ফিরোজাবাদ এল
যোগিন্‌দাদার বিষম খিদে পেল।
ঠোঙায়-ভরা পকৌড়ি আর চলছে মটর-ভাজা,
এমন সময় হাজির এসে জৌনপুরের রাজা।
পাঁচশো-সাতশো লোক-লস্কর, বিশ-পঁচিশটা হাতি—
মাথার উপর ঝালর দেওয়া প্রকাণ্ড এক ছাতি।
মন্ত্রী এসেই দাদার মাথায় চড়িয়ে দিল তাজ;
বললে, ‘যুবরাজ,
আর কতদিন রইবে, প্রভু, মোতিমহল ত্যেজে!’
বলতে বলতে রামশিঙা আর ঝাঁঝর উঠল বেজে।

ব্যাপারখানা এই—
রাজপুত্র তেরো বছর রাজভবনে নেই।
সদ্য ক’রে বিয়ে,
নাথ্‌দোয়ারার সেগুন-বনে শিকার করতে গিয়ে
তার পরে যে কোথায় গেল খুঁজে না পায় লোক;
কেঁদে কেঁদে অন্ধ হল রানীমায়ের চোখ।