পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছড়া
৮০৯

যূথীবন হতে বাতাসেতে আসে সুধার স্বাদ,
বেণী-বাঁধনের মালায় পেতেম যে সংবাদ
এই তো জেগেছে নবমালতীর সে সৌরভ—
মন শুধু বলে, অসম্ভব এ অসম্ভব।

ভাবনার ভুলে কোথা চলে যাই অন্যমনে
পথসংকেত কত জানায়েছে যে বাতায়নে।
শুনিতে পেলেম, সেতারে বাজিছে সুরের দান
অশ্রুজলের-আভাসে-জড়িত আমারি গান।
কবিরে ত্যজিয়া রেখেছ কবির এ গৌরব—
মন শুধু বলে, অসম্ভব এ অসম্ভব।

শান্তিনিকেতন
১৬ জুলাই ১৯৪০


শ্রাদ্ধ

খেঁদুবাবুর এঁধো পুকুর, মাছ উঠেছে ভেসে;
পদ্মমণি চচ্চড়িতে লঙ্কা দিল ঠেসে।
আপনি এল ব্যাক্‌টিরিয়া, তাকে ডাকা হয় নাই;
হাঁসপাতালের মাখন ঘোষাল বলেছিল, ‘ভয় নাই।’
সে বলে, ‘সব বাজে কথা, খাবার জিনিস খাদ্য।’
দশ দিনেতেই ঘটিয়ে দিল দশ জনারই শ্রাদ্ধ!
শ্রাদ্ধের যে ভোজন হবে কাঁচা তেঁতুল দরকার,
বেগুন-মুলোর সন্ধানেতে ছুটল ন্যাড়া সরকার।
বেগুন মুলো পাওয়া যাবে নিল্‌ফামারির বাজারে;
নগদ দামে বিক্রি করে, তিন টাকা দাম হাজারে।
দুমকাতে লোক পাঠিয়েছিল, বানিয়ে দেবে মুড়কি;
সন্দেহ হয়, ওজন মতো মিশল তাতে গুড় কি।
সর্ষে যে চাই মোন দু-তিনেক ঝোলে ঝালে বাটনায়;
কালুবাবু তারি খোঁজে গেলেন ধেয়ে পাটনায়।