পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪৬
সঞ্চয়িতা

পত্রে পাওয়া যায়—

 ছিলাম তখন পদ্মার বোটে। জলভারনত কালো মেঘ আকাশে, ও পারে ছায়াঘন তরুশ্রেণীর মধ্যে গ্রামগুলি, বর্ষার পরিপূর্ণ পদ্মা খরবেগে বয়ে চলেছে, মাঝে মাঝে পাক খেয়ে ছুটেছে ফেনা। নদী অকালে কূল ছাপিয়ে চরের ধান দিনে দিনে ডুবিয়ে দিচ্ছে। কাঁচা-ধানে-বোঝাই চাষিদের ডিঙিনৌকা হুহু করে স্রোতের উপর দিয়ে ভেসে চলেছে। ওই অঞ্চলে এই চরের ধানকে বলে জলি ধান। ...... ভরা পদ্মার উপরকার ওই বাদল-দিনের ছবি ‘সোনার তরী’ কবিতার অন্তরে প্রচ্ছন্ন এবং তার ছন্দে প্রকাশিত।

১০৯ নিদ্রিতা। ‘রাজার ছেলে ফিরেছি দেশে দেশে’ ইত্যাদি প্রথম স্তবক সংকলনে বর্জিত হইয়াছে।

১২০ পরশপাথর। সঞ্চয়িতার দ্বিতীয় সংস্করণ হইতে ইহার তৃতীয় স্তবক বর্জিত ছিল।

১২৪ দুই পাখি। ‘ভারতী ও বালক’ পত্রিকার ১২৯৯ অগ্রহায়ণ সংখ্যায় ‘নরনারী’ নামে প্রকাশিত। জীবনস্মৃতির ‘ঘর ও বাহির’ অধ্যায়ে কবি নিজের শৈশব স্মরণ করিয়া লিখিয়াছেন—

 বিশ্বপ্রকৃতিকে আড়াল-আবডাল হইতে দেখিতাম। বাহির বলিয়া একটি অনন্তপ্রসারিত পদার্থ ছিল যাহা আমার অতীত, অথচ যাহার রূপ শব্দ গন্ধ দ্বার-জালনার নানা ফাঁক-ফুকর দিয়া এ দিক ও দিক হইতে আমাকে চকিতে ছুঁইয়া যাইত। সে যেন গরাদের ব্যবধান দিয়া নানা ইশারায় আমার সঙ্গে খেলা করিবার নানা চেষ্টা করিত। সে ছিল মুক্ত, আমি ছিলাম বদ্ধ; মিলনের উপায় ছিল না, সেইজন্য প্রণয়ের আকর্ষণ ছিল প্রবল। আজ সেই খড়ির গণ্ডি [ভৃত্য শ্যামের আঁকা] মুছিয়া গেছে, কিন্তু গণ্ডি তবু ঘোচে নাই। দূর এখনও দূরে, বাহির এখনও বাহিরেই।

ইহার পর কবি-কর্তৃক এই কবিতার প্রথম স্তবক উদ্ধৃত হইয়াছে।

১৩৩ মানসসুন্দরী। রবীন্দ্রনাথের ছিম্নপত্রে লিপিবদ্ধ আছে—