পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৮৪৭
সঞ্চয়িতা
৮৪৭
                গ্রন্থপরিচয়।।            ৮৪৭

কবিতা আমার বহুকালের প্রেয়সী-বোধ হয় যখন আমার রখীর মতো বয়স ছিল তখন থেকে আমার লঙ্গে বাক্দত্তা হয়েছিল। তখন থেকে আমাদের পুকুরের ধারে বটের তলা, বাড়ি- ভিতরের বাগান, বাড়িভিতরের একতলার অনাবিষ্কৃত ঘরগুলো, এবং সমস্ত বাহিরের জগৎ, এবং দাসীদের মুখের সমস্ত রূপকথ। এবং ছড়াগুলো, আমার মনের মধ্যে ভারী একট। মায়াজগৎ তৈরি করেছিল। তখনকার সেই আব্ছায়। অপূর্ব মনের ভাব প্রকাশ করা ভারী শক্ত; কিন্তু এই পর্যন্ত বেশ বলতে পারি,

কবিকল্পনার

সঙ্গে তখন থেকেই মালাব্বল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ও মেয়েটি পয়মন্ত নয় তা স্বীকার করতে হয়; আর যাই হোক, সৌভাগ্য নিয়ে আসেন না। স্থুখ দেন না বলতে পারি নে, কিন্তু স্বস্তির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। যাঁকে বরণ করেন তাঁকে নিবিড় আনন্দ দেন, কিন্তু এক এক সময় কঠিন আলিঙ্গনে হংপিগুটি নিংড়ে রক্ত বের করে নেন। যে লোককে তিনি নিধাচন করেন, সংসারের মাবখানে ভিত্তি স্থাপন করে গৃহস্থ হয়ে স্থির হয়ে আয়েদ করে বসা সে লক্ষমীছাড়ার পক্ষে একেবারে অগস্তব। কিন্তু আমার আসল জীবনটি তার কাছেই বন্ধক আছে। 'সাধনা”ই লিখি আর জমিদারিই দেখি যেমনি কবিতা লিখতে আরম্ভ করি অমনি আমার চিরকালের যথার্থ আপনার মধ্যে প্রবেশ করি-- আমি বেশ বুঝতে পারি, এই আমার স্থান। জীবনে জ্ঞাতনারে এবং অজ্ঞাতদারে অনেক মিথ্যাচরণ করা ঘায়, কিন্তু কবিতায় কখনও মিথা| কথা বলি নে- সেই আমার জীবনের সমস্ত গভীর সত্যের একমাত্র আশ্রযস্থান। শিলাইদহ । ৮ মে ১৮৯৩ ১০১।১৮৮ সমুদ্রের প্রতি । বসুন্ধরা॥ বৃহৎ ধরীর প্রতি যে নাড়ীর টান উল্লেখিত কবিতাঁ-ছুটির ভাবনা-বেদনা-ধারায় পরিব্যাণ্ড সে সম্পর্কে ছিন্নপত্র গ্রন্থে বলা হইয়াছে-

এ ধেন এই বৃহৎ ধরণীর গ্রতি একট! নাড়ীর টান! এক লময়ে যখন আমি এই পৃথিবীর সঙ্গে এক হয়ে ছিলুম, যখন আমার