পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৮৫২
সঞ্চয়িতা
৮৫২

৮৫২ সঞ্চয়িতা

    সর্বাঙ্গ নড়িছে তার, সৌন্দর্যসংগীতে
    কে চালাবে তারে ! সেথা হতে ফিরে এসে
    স্মিতহাস্যসুধাস্নিগ্ধ তব পুণ্যদেশে,
    কল্যাণকামন যেথা নিয়ত বিরাজে
    লক্ষ্মীরূপে, সেই তব ক্ষুদ্র গৃহ-মাঝে
    বুঝিতে পেরেছি আমি ক্ষুদ্র নহি কভু;
    যত দৈন্য থাক্‌ মোর, দীন নহি তবু;
    তুমি মোরে করেছ সম্রাট । তুমি মোরে
    পরায়েছ গৌরবমুকুট | পুষ্পডোরে
    সাজায়েছ কঠ মোর । তব রাজটিকা
    দীপিছে ললাট-মাঝে মহিমার শিখা
    অহর্নিশি । আমার সকল দৈন্যলাজ
    আমার ক্ষুদ্রতা যত ঢাকিয়াছ আজ
    তব রাজ-আস্তরণে। হৃদিশয্যাতল
    শুভ্র দুগ্ধফেননিভ, কোমল শীতল,
    তারি মাঝে বসায়েছে ;সমস্ত জগৎ
    বাহিরে দাঁড়ায়ে আছে, নাহি পায় পথ
    সে অন্তর-অন্তঃপুরে । পূর্বে একদিন
    বধির জীবন ছিল সংগীতবিহীন--
    প্রেমের আহ্বানে আজি আমার সভায়
    এসেছে বিশ্বের কবি, তারা গান গায়
    মোদের দোঁহারে ঘিরি ; অমরবীণায়
    উঠিয়াছে কী ঝংকার ! নিত্য শুনা যায়
    দূরদূরান্তর হতে দেশবিদেশের
    ভাষা, যুগযুগান্তরের কথা, দিবসের
    নিশীথের গান, মিলনের বিরহের
    গাথা, তৃত্তিহীন শ্রান্তিহীন আগ্রহের
    উৎকষ্ঠিত তান ।- আধুনিক রাজধানী,