পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৮৬৫
সঞ্চয়িতা
৮৬৫
                গ্রন্থপরিচয়               ৮৬৫
          বলা উচিত, কবিতার ছন্দে অনায়াসে পড়া        যায়, প্রধানতঃ এরূপ রচনাই চয়ন করা হইয়াছে।        অল্প কয়েকটি রচনায় ব্যতিক্রম দেখা যাইবে। যেমন        পঁয়ত্রিশ-সংখ্যক গানে 'দিন ফুরালো' এবং চল্লিশ-        সংখ্যক গানে'যাবে নাপাব না'প্রভৃতি শ্লোকাংশের       উপক্রমে স্বরের দীর্ঘ উচ্চারণ করিলে হয়তো ছন্দ ও        ভাব উভয়েরই চারুতা পরিস্ফুট হইবে। পনেরো-        সংখ্যক গানে অন্তস্থিত অনুপ্রাস বা আচরণে চরণে        মিল অল্পই আছে। উত্তরকালীন বহু রচনাতেই কবি        গানকে কবিতার নিপুণ ছন্দোবন্ধন হইতে স্বেচ্ছায়        মুক্তি দিয়াছেন। অখণ্ড গীতবিতানে বা পাণ্ডুলিপিতে        এমন বহু গানও খুঁজিয়া পাওয়া যায় যাহার গঠন        গদ্যকবিতার অনুরূপ ।          এ কথা বলা বাহুল্য যে, গীতিকবিতার ধুয়া        বারবার পঠিত বা গীত হইয়া থাকে । অথচ, সব        সময় উহা বারবার মুদ্রিত হয় নাই। এ বিষয়ে মূল        পুস্তকের অনুসরন করা৷ হইয়াছে। ৭২৭   ভারতবিধাতা। গীতালির পূর্ববর্তী এই রচনাটি ১৩১৮        মাঘের তন্ববোধিনী পত্রিকায় প্রকাশিত এবং ওই        বৎসরের মাঘোৎসবে গীত হয়। তৎপূর্বে ১৩১৮ সালের        কংগ্রেস-অধিবেশনেও গাওয়া হইয়াছিল।             ছন্দপরিচয়। এই রচনাটি বহুলাংশে সংস্কৃত        ছন্দোনীতির উপরে প্রতিষ্ঠিত। তদনুসারে অকারান্ত        শব্দকে অকারান্তরূপে উচ্চারণ করা এবং আ ঈ উ        এ ও এই পাঁচটি স্বরবর্ণের দীর্ঘ উচ্চারণ করা        আবশ্যক । কেবল পঞ্চম স্তবকের 'গাহে'শব্দে        একারের উচ্চারণ হ্রস্ব । সংস্কৃত ছন্দে পংক্তিপ্রান্তস্থিত        হ্রস্ব স্বরও দীর্ঘ বলে স্বীকৃত হয়। তদুসারে প্রথম        স্তবকের “বঙ্গ" ও "তরঙ্গ" শব্দে অকারের এবং        তৃতীয় স্তবকের 'রাত্রি' শব্দে ইকারের উচ্চারণ দীর্ঘ        হবে। তা ছাড়া,যুগ্মধ্বনিমাত্রই, যেমন-__ সিন্ধু        উৎকল ও জৈন শব্দের সিন্‌ উৎ ও জৈ (জই)        ধ্বনি দীর্ঘ বলে স্বীকার্য । এই প্রসঙ্গে মনে রাখা        প্রয়োজন যে, শঙ্খধ্বনি,দুঃখত্রাতা ও দুঃখত্রায়ক        শব্দের উচ্চারণরূপ হচ্ছে যথাক্রমে        শঙ্খদধ্বনী, দুকখৎত্রাতা ও ৫৫