দোঁহার মাঝে ঘুচিয়া যাবে আলোর ব্যবধান।
আঁধারতলে গুপ্ত হয়ে বিশ্ব যাবে লুপ্ত হয়ে,
আসিবে মুদে লক্ষকোটি জাগ্রত নয়ান।
অন্ধকারে নিকট করে, আলোতে করে দূর।
যেমন দুটি ব্যথিত প্রাণে দুঃখনিশি নিকটে টানে
সুখের প্রাতে যাহারা রহে আপনা-ভরপুর।
আঁধারে যেন দুজনে আর দুজন নাহি থাকে।
হৃদয় মাঝে যতটা চাই ততটা যেন পুরিয়া পাই,
প্রলয়ে যেন সকল যায়—হৃদয় বাকি রাখে।
হৃদয় দেহ আঁধারে যেন হয়েছে একাকার।
মরণ যেন অকালে আসি দিয়েছে সব বাঁধন নাশি,
ত্বরিতে যেন গিয়েছি দোঁহে জগৎ-পরপার।
দু দিক হতে দুজনে যেন বহিয়া খরধারে
আসিতেছিল দোঁহার পানে ব্যাকুলগতি ব্যগ্রপ্রাণে,
সহস। এসে মিশিয়া গেল নিশীথপারাবারে।
থামিয়া গেল অধীর স্রোত, থামিল কলতান,
মৌন এক মিলনরাশি তিমিরে সব ফেলিল গ্রাসি—
প্রলয়তলে দোঁহার মাঝে দোঁহার অবসান।
সুরদাসের প্রার্থনা
ঢাকো ঢাকো মুখ টানিয়া বসন, আমি কবি সুরদাস।
দেবী, আসিয়াছি ভিক্ষা মাগিতে, পুরাতে হইবে আশ।
অতি-অসহন বহ্নিদহন
মর্ম-মাঝারে করি যে বহন,
কলঙ্করাহু প্রতি পলে পলে জীবন করিছে গ্রাস