পাতা:সতী-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/১৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সতী

লোক, তোমায় দেবতাসমাজে অপাংক্তেয় হইয়া থাকিতে হইতে। তুমি কোথা হইতে আসিয়াছ, তাহা কেহ জানে না, তোমার গোত্র ও কুলের পরিচয় নাই। তোমার আচার ব্যবহার জঘন্য, তুমি শ্মশানে থাক, ঘৃণিত ভিক্ষাবৃত্তি তোমার ব্যবসায়, একটা ষাঁড়ের উপরে চাপিয়া তুমি সাপ লইয়া খেলাও। কোন্‌ পার্ব্বত্য সাপুড়ে দেশ হইতে তুমি আসিয়াছ, তাহা জানি না। বসন-ভূষণ নাই—দিগম্বর, সময়ে সময়ে দুর্গন্ধ বাঘছাল পরিয়া থাক। এই ঘৃণিত আচরণ দেবসমাজে অতি নিন্দিত। আমার দিকে চাহিয়া তাঁহারা তোমায় কেহ কিছু বলেন না। দেখ, আমার জামাতা চন্দ্রকে দেখ—যেমন মধুর প্রকৃতি, তেমনি বিনয়ী—যেমন রূপবান্‌, তেমনি গুণশীল। তাঁহার রূপের গুণে দেব-সভা উজ্জ্বল, বিশ্ব উজ্জ্বল। অগ্নি ও ধর্ম্ম ইহারাও জামাতা, ইঁহারা ত্রিদিব উজ্জ্বল করিয়া আছেন। আর তাঁহাদের পার্শ্বে জাতিহীন, কুলহীন, বৃষবাহন, নগ্নকায়, ক্ষিপ্ত ভিক্ষুককে জামাতা বলিয়া পরিচয় দিতেও ঘৃণা হয়। তোমার অহঙ্কারের মাত্রা পূর্ণ হইয়াছে, তাহা একেবারে আমি চূর্ণ করিব।”

 এই উক্তিতে বিষ্ণু, ইন্দ্র প্রভৃতি দেবগণ লজ্জিত হইলেন। কিন্তু দক্ষ ব্রহ্মার অতি প্রিয়, এই জন্য সকলেই কেবল মাথা হেঁট করিয়া রহিলেন। স্বয়ং ব্রহ্মা অতিমাত্র পুত্রবাৎসল্যে প্রতিবাদ করিতে কুণ্ঠিত হইলেন।

 দক্ষ যখন শিবের নিন্দাবাদ করিতেছিলেন, তখন ভৃগুর মুখে উল্লাসের চিহ্ন দেখা যাইতেছিল। ভৃগুর গৃহেই যজ্ঞ—গৃহপতি দক্ষের কথায় সায় দিলেন। তৎসঙ্গে পূষা প্রভৃতি ঋষিগণও মহাদেবের নিন্দায় বেশ আমোদ অনুভব করিতে লাগিলেন। তাঁহারা শিবনিন্দা

১৩