পাতা:সবুজ পত্র (চতুর্থ বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& 89 সবুজ পত্ৰ শ্রাবণ, ১৩২৪ চিঠির একটা মস্ত অভাব হচ্চে ঐ-বৃষ্টির চিঠি রৌদ্রের সময় গিয়ে পৌঁছয়, সন্ধ্যের চিঠি সকালে উপস্থিত হয়-উভয়পক্ষেৱ মধ্যে পরিপূর্ণ সমবেদন থাকে না। ঘনীভূত অন্ধকার সায়াহে বাতি জেলে একলা বসে যে চিঠিটা লেখা হয়, সেটা যদি তুমি প্ৰাতঃকালে মুখপ্রক্ষালনপূর্বক সপরিবারে চা-রুটি সেবন করতে করতে পাঠ কর, তাহলে কিরকম পাপানুষ্ঠান হয় ভেবে দেখ দেখি-চুরি ক’রে লোকের ডায়ারি পড়লে যে পাপ হয়, এটা তার চেয়ে কিছু কম নয়। তোমার এবারকার চিঠিতেও “ছবি ও গানের” কথা আছেবিষয়টা আমার পক্ষে খুব মনোরম সন্দেহ নেই। আজকাল যেসকল কবিতা লিখচি, তা” “ছবি ও গান” থেকে এত তফাৎ যে, আমি ভাবি আমার লেখার আর কোথাও পরিণতি হচ্চে না, ক্ৰমাগতই পরিবর্তন চলেছে। আমি বেশ অনুভব করতে পারাচি, আমি যেন আর একটা পরিবর্তনের সন্ধিস্থলে আসন্ন অবস্থায় দাড়িয়ে আছি। এরকম আর কতকাল চলবে তাই ভাবি। অবশেষে একটা জায়গা ত পাব, যেটা বিশেষরূপে আমারি জায়গা। অবিশ্রাম পরিবর্তন দেখলে ভয় হয় যে, এতকাল ধরে এতগুলো যে লিখলুম, সেগুলো কিছুই হয়ত টিকবে না-আমার নিজের যেটা যথার্থ চরম অভিব্যক্তি, সেটা যতক্ষণ না আসে, ততক্ষণ এগুলো কেবল tentative ভাবে আছে। বাস্তবিক, কোনটা সত্যি, কোনটা মিথ্যে, কবে যে ধরা পড়বে তার ঠিক নেই। কিন্তু আমি দেখেছি, যদিও এক এক সময়ে সন্দেহের অন্ধকারে মন আচ্ছন্ন হয়ে যায়, এবং আমার পুরাতন সমস্ত লেখার উপরেই অবিশ্বাস জন্মে, তবু মোটের উপরে মন থেকে এই আত্মবিশ্বাসটুকু যায় না যে, যদি যথেষ্ট কাল বেঁচে থাকি, তাহলে এমন