পাতা:সবুজ পত্র (চতুর্থ বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VOOR সবুজ পত্ৰ आशिंन ७ श्रुढिंक, s७२8 এই অজ্ঞাতবাসের দুঃসহ দৈন্যে মানুষের বহু যুগ কেটে গেল। শেষে একদিন পরম শুভক্ষণে ক্লান্তদেহ, ক্ষুব্ধচিত্ত মানুষ বলে উঠল আর অন্নের আশায় তার পিছু পিছু ঘুরে বেড়াব না,-আন্নিকে সৃষ্টি করব, স্বল্প অন্নকে বহু করব । সেদিন নিশ্চয়ই স্বগের তোরণে মঙ্গলশঙ্খ বেজে উঠেছিল ; দিব্যাঙ্গনার মর্ত্যচক্ষুর অদৃশ্য হেমঘটে অভিষেকবারি এনে মানুষের মাথায় ঢেলেছিলেন ; ইন্দ্ৰদেব এসে সোণার রাজমুকুট তার মাথায় পরিয়েছিলেন ; আর সমস্ত আকাশ ঘিরে দেবতারা প্ৰসন্ন নোত্রে দীর্ঘ বনবাসের পরে মানুষের নিজ রাজ্যে অভিষেক চেয়ে দেখেছিলেন। কৃষি আরম্ভ হল। প্ৰাণের ধাপ থেকে মনের ধাপে উঠে মানুষ দেখল যে এখানে দাড়ালে অন্ন এসে আপনিই হাতে ধরা দেয়, তাকে পৃথিবীময় খুঁজে বেড়াতে হয় না। এখানে বসে তপস্যা করলে কালো মাটীর বুক চিরে সোণার ফসল বাইরে এসে পৃথিবী ঢেকে ফেলে ; দিনের অন্ন দিন খুঁজে প্ৰাণান্ত হতে হয় না। মানুষ জানল, “পৃথিবী বা অন্নম, পৃথিবীই অন্ন। মাটীর তলে জলের অফুরন্ত ধারার মত মাটীর মধ্যে অন্নেরও অফুরন্ত ভাণ্ডার লুকান আছে ; লাঙ্গলের ফালে তাকে তুলে আনতে জানলে অন্নের দৈন্য দূর হয় ; যে মন্ত্র ডারুইন জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে প্ৰত্যক্ষ করেছিলেন তার শক্তিকে ব্যর্থ করা যায়। মাটির সঙ্গে মানুষের হৃদয়ের সম্বন্ধ স্থাপন হল। মাটির টানে উদ্ভান্ত বনাচারী গৃহী হল। সেইদিন মানুষের স্বদেশ, সমাজের প্ৰতিষ্ঠা হল, মানুষের গ্রাম নগর গড়ে উঠল, শিল্প বাণিজ্যের সুরু হল। পৃথিবীর আদিম অরণ্য কেটে সভ্যতার সোনার মন্দিরে মানুষের প্রতিষ্ঠা হল।