পাতা:সবুজ পত্র (চতুর্থ বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাত্র ও পাত্রী। ইতিপূর্বে প্ৰজাপতি কখনো আমার কপালে বসেন নি বটে কিন্তু একবার আমার মানসপদ্মে বসেছিলেন । তখন আমার বয়স ষোলো । , তার পরে-কঁচা ঘুমে চমক লাগিয়ে দিলে যেমন ঘুম আর আসতে চায় না-আমার সেই দশা হল। আমার বন্ধু বান্ধবরা কেউ কেউ দারপরিগ্রহ ব্যাপারে দ্বিতীয়, এমন কি, তৃতীয় পক্ষে প্রোমোশন পেলেন আমি কৌমাৰ্য্যের লাসটু বেঞ্চিতে বসে শূন্য সংসারের কড়িকাঠ গণনা করে কাটিয়ে দিলুম। আমি চোদ্দ বছর বয়সে এণ্টেন্স পাস করেছিলুম। তখন বিবাহ কিম্বা এণ্টে ন্যস পরীক্ষায় বয়স বিচার ছিল না । আমি কোনোদিন পড়ার বই গিলি নি, সেইজন্যে শারীরিক বা মানসিক অজীর্ণ রোগে আমাকে ভুগতে হয় নি। ইদুর যেমন দাত বসাবার জিনিস পেলেই সেটাকে কেটে কুটে ফেলে, তা সেটা খাদ্যই হোক আর অখাদ্যই হোক, শিশুকাল থেকেই তেমনি ছাপার বই দেখলেই সেটা পড়ে ফেলা আমার স্বভাব ছিল। সংসারে পড়ার বইয়ের চেয়ে না-পড়ার বইয়ের সংখ্যা ঢের বেশী এইজন্যে আমার পুথির সৌরজগতে স্কুলপাঠ্য পৃথিবীর চেয়ে বেস্কুল-পাঠ্য সূৰ্য চোদ্দ লক্ষগুণে বড় ছিল। ভৰু, আমার সংস্কৃত পণ্ডিত মশায়ের নিদারুণ ভবিষ্যদ্বাণী সত্ত্বেও, আমি পরীক্ষায় পাস করেছিলুম।