পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SRR সবুজ পত্ৰ আষাঢ়, ১৩২৩ বৰ্ণনা-শক্তিতে বাল্মীকির সমকক্ষ দ্বিতীয় কবি সংস্কৃত সাহিত্যে নেই। বাল্মীকির পক্ষে লঙ্কাপুরীর চক্ষুষ পরিচয় লাভ করবার কোন ও সম্ভাবনা ছিলনা, তার কারণ রাম জন্মাবার ষাট হাজার বৎসর পূর্বে রামায়ণ লেখা হয়েছিল। এ কাব্য যখন রচিত হয়, তখন সে রাম ও ছিলনা, সে অযোধ্যাও ছিল না, সে রাবণ ও ছিলনা, সে লঙ্কাও ছিল না । তাই রামায়ণের বর্ণনায় আমরা লঙ্কার চেহারা দেখতে পাইনে, যা পাই তা হচ্ছে গাছের ফৰ্দ, ফুলের ফর্দ, পাখীর ফর্দ ইত্যাদি; এ সব গাছ, এ সব ফুল, এ সব পাখী ভারতবর্ষে ও প্রচুর পরিমাণে মেলে। এ লঙ্কাপুরী ভারতবর্সের যে-কোনও দেশে রচিত হতে পারত। বাল্মীকি বলেছেন যে, লঙ্কা বিশ্বকৰ্ম্মার মানসী সৃষ্টি, কিন্তু আমরা দেখতে পাই এ পুরী বিশ্বকৰ্ম্মার নয়, বাল্মীকির মনোকল্পিত। কবি বলেছেন যে, প্লাবগশ্রেষ্ঠ পবননন্দনের নয়নে সে পুরা আকাশে ভাসমান স্বরূপে প্ৰতিভাত হয়েছিল । তা হবারই কথা, কেননা রামায়ণের লঙ্কা হচ্ছে ইংরাজিতে যাকে বলে Castle in the air। ফলকথা। এই যে, সংস্কৃত সরস্বর্তী সমুদ্রের জলস্পর্শ করতেন না। R সংস্কৃতসাহিত্য এ বিষয়ে নীরব থাকলেও, ভারতবাসীরা সমুদ্র । পথে যে দেশ দেশান্তরে যাতায়াত করতেন, তার যথেষ্ট প্রমাণ আমরা বৌদ্ধসাহিত্যে পাই। জাতকে, অবদানে, জম্বুদ্বীপবাসীদের সমুদ্রযাত্রার বহু বৰ্ণনা আছে। এ সাহিত্য গল্পসাহিত্য হলেও রূপকথা বলে উড়িয়ে দেবার জো নেই, কেননা এ সাহিত্যের সমুদ্র যাত্ৰ-বৰ্ণন থেকে স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় যে, বর্ণনকারীদের সমুদ্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ পরিচয় ছিল। প্রথমতঃ দেখতে পাই যে, বৌদ্ধ