পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

y সবুজ পত্র আষাঢ়, ১৩২৩ এ দেশে ইংরেজ আসবার পুর্বেই এ পরিবারের ভগ্নদশা উপস্থিত হয়েছিল, তারপর কোম্পানির আমলে এদের সর্বনাশ হয়। এদের বংশবৃদ্ধির সঙ্গে সম্পত্তি ভাগ হওয়ার দরুণ যে-সকল সরিক নিঃস্ব হয়ে পড়েছিল, ক্ৰমে তাদের বংশ লোপ হতে আরম্ভ হল ; কেননা নিজের চেষ্টায়, নিজের পরিশ্রমে অর্থে পাৰ্জন করাটা এদের মতে অতি হেয় কাৰ্য্য বলে’ গণ্য ছিল । তারপর সরিকানা বিবাদ । রায় পরিবার ছিল শাক্ত,-এত ঘোর শাক্ত যে, রুদ্রপুরের ছেলে বুড়োতে মদ্যপান করত। এমন কি, এ বংশের মেয়েরাও তাতে কোন আপত্তি করত না, কেননা তাদের বিশ্বাস ছিল মদ্যপান করা একটীি পুরুষালি কাজ। সন্ধ্যার সময় কুলদেবতা সিংহবাহিনীম দর্শনের পর বাবুরা যখন বৈঠকখানায় বসে মদ্যপানে রত হতেন—তখন সেই সকল গৌরবর্ণ প্ৰকাণ্ড পুরুষদের কপালে রক্তচন্দনের ফোঁটা আর জবাফুলের মত দুই চোখ, এই তিনে মিলে সাক্ষাৎ মহাদেবের রোষকষায়িত ত্রিনেত্রের মত দেখাত। এই সময়ে পৃথিবীতে এমন দুঃসাহসের কাৰ্য্য নেই, যা তাদের দ্বারা সিদ্ধ না হত । তঁরা লাঠিয়ালদের এ-সরিকের ধানের গোলা লুঠে আনতে, ও-সিরিকের প্রজার বৌদ্ধিকে বে-ইজ্জৎ করতে হুকুম দিতেন। ফলে রক্তারক্তি কাণ্ড হত। এই জ্ঞাতি-শক্রিতার দরুণ তঁরা উৎসয়ের পথে বহুদূর অগ্রসর হয়েছিলেন। তারপর এদের বিষয়সম্পত্তি যা অবশিষ্ট ছিল, তা দর্শশালা বন্দোবস্তের প্রসাদে হস্তান্তরিত হয়ে গেল। কিস্তির শেষ তারিখে সদর খাজানা কোম্পানির মালখানায় দাখিল না করলে লক্ষমী যে চিরদিনের মত গৃহত্যাগ করবেন,-এ জ্ঞান এদের মনে কখনও জন্মাল না । পুর্ব আমলে নবাব-সরকারে নিয়মিত শালিয়ানা মাল