পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চার-ইয়ারী-কথা। সোমনাথ এতক্ষণ, যেমন তঁর অভ্যাস, একটির পর আর একটি সিগারেট অনবরত খেয়ে যাচ্ছিলেন । তঁর মুখের সুমুখে ধোয়ার একটি ছোটখাটো মেঘ জমে গিয়েছিল। তিনি একদৃষ্টে সেইদিকে চেয়েছিলেন,—এমন ভাবে, যেন সেই ধোয়ার ভিতর তিনি কোন নূতন তম্বের সাক্ষাৎ লাভ করেছেন। পূর্ব পরিচয়ে আমাদের জানা ছিল যে, সোমনাথকে যখন সবচেয়ে অন্যমনস্ক দেখায়, ঠিক তখনি তঁর মন সব চেয়ে সজাগ ও সতর্ক থাকে, সে সময়ে একটি কথাও তার কাণ এড়িয়ে যায় না, একটি জিনিষও তার চোখ এড়িয়ে যায় না। সোমনাথের চাচাছোলা মুখটি ছিল ঘড়ির dialএর মত, অর্থাৎ তার ভিতরকার কলটি যখন পুরোদমে চলছে তখন সে মুখের তিলমাত্র বদল হ’ত না, তার একটি রেখাও বিকৃত হ’ত না । তঁর এই আত্মসংযমের ভিতর অবশ্য আর্ট ছিল। সীতেশ তার কথা শেয করতে না করতেই সোমনাথ ঈষৎ ভ্ৰকুঞ্চিত করলেন। আমরা বুঝলুম সোমনাথ তঁর মনের ধনুকে ছিলে চড়ালেন, এইবার শরবর্ষণ আরম্ভ হলে । আমাদের বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না। তিনি ডান হাতের সিগারেট বঁ হাতে বদলি করে। দিয়ে, অতি মোলায়েম অথচ অতি দানাদার গলায় তঁর কথা আরম্ভ করলেন। লোকে যেমন করে” গানের গলা তৈরি করে, সোমনাথ তেমনি করে” কথার গলা তৈরি করেছিলেন, সে কণ্ঠস্বরে কর্কশতা কিম্বা জড়তার লেশমাত্র ছিল না। তার উচ্চারণ এত পরিষ্কার যে, তঁর মুখের কথার প্রতি অক্ষর গুণে নেওয়া যেত। আমাদের এ বন্ধুটি সহজ V