পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় বর্ষ, ষষ্ঠ ও সপ্তম সংখ্যা জাপানের পত্ৰ \9RS বোধ এবং প্রকাশকে প্রভূত পরিমাণে বাড়িয়ে তোলা যেতে পারে,- এখানে এসে অবধি এই কথাটা আমার মনে হয়েচে । হৃদয়োচ্ছাস আমাদের দেশে এবং অন্যত্র বিস্তর দেখোঁচি, সেইটো এখানে চোখে পড়ে না। সৌন্দৰ্য্যের অনুভূতি এখানে এত বেশী করে’ এবং এমন সর্বত্র দেখতে পাই যে, স্পষ্টই বুঝতে পারি যে, এটা এমন একটা বিশেষ বোধ যা আমরা ঠিক বুঝতে পারি নে। এ যেন কুকুরের ভ্ৰাণশক্তি ও মৌমাছির দিক-বোধের মত, আমাদের উপলব্ধির অতীত । এখানে যে লোক অত্যন্ত গরীব, সে ও প্রতিদিন নিজের পেটের ক্ষুধাকে বঞ্চনা করে ও এক আধা পয়সার ফুল না কিনে বঁাচে না । এদের চোখের ক্ষুধা এদের পেটের ক্ষুধার চেয়ে কম নয়। কাল দুজন জাপানী মেয়ে এসে, আমাকে এ দেশের ফুল সাজানোর বিদ্যা দেখিয়ে গেল । এর মধ্যে কত আয়োজন, কত চিন্তা, কত নৈপুণ্য আছে, তার ঠিকানা নেই। প্রত্যেক পাতা এবং প্রত্যেক ডালটির উপর মন দিতে হয়। চােখে দেখার ছন্দ এবং সঙ্গীত যে এদের কাছে কত প্রবলভাবে সুগোচর, কাল আমি ঐ দুজন জাপানী মেয়ের কাজ দেখে বুঝতে পারছিলুম। একটা বইয়ে পড়ছিলুম, প্রাচীন কালে বিখ্যাত যোদ্ধা। যারা ছিলেন, তারা অবকাশকালে এই ফুল সাজাবার বিদ্যার আলোচনা করতেন । তঁাদের ধারণা ছিল, এতে তাদের রণদক্ষতা ও বীরত্বের উন্নতি হয় । এর থেকেই বুঝতে পারবে, জাপানী নিজের এই সৌন্দৰ্য-অনুভূতিকে সৌধীন জিনিস বলে মনে করে না ; ওরা জানে গভীরভাবে এতে মানুষের শক্তিবৃদ্ধি হয়। এই শক্তিবৃদ্ধির মূল কারণটা হচ্চে শাস্তি; যে সৌন্দর্ঘ্যের আনন্দ নিরাসক্ত আনন্দ, তাতে জীবনের ক্ষয় নিবারণ 8VS)