পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭૨ সবুজ পত্ৰ स्त्रांनि ७ कांठिंब, ३७२७ আত্মার নিত্য-বিকসোমুখ প্ৰতিভাকে জড়ের মতই গতিহীন করে।’ রাখে ; তাকে এতটুকুও প্রসারলাভ করতে দেয় না। সে প্রাচীন যুগে যেটুকু আত্মাকে অধিকার করেছিল, সেইটুকুই তার সর্বস্ব হয়ে দাঁড়ায় এবং আত্মারও অনন্ত অভিব্যক্তির চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। জাৰ্ম্মাণ ও ফরাসী-ভাষা সম্বন্ধে যা যা বলা হয়েছে, তা যে সংস্কৃত ও বাংলা-ভাষা সম্বন্ধে অনেকটা খাটে তা বোধ হয়। সকলেই বুঝতে পেরেছেন। জাৰ্ম্মণরা তাদের মূল-ভাষার শুদ্ধতা রক্ষা করবার জন্য যে সব উপায় অবলম্বন করছেন-আমরা আমাদের অপভ্ৰষ্ট ভাষাকে শুদ্ধ করবার জন্যে সেই সব উপায়ই অবলম্বন করছি ; এই যা প্ৰভেদ । ফলে আমরা উভয়েই মাতৃ-ভাষার ইভলিউসানের পথ আগলে দাড়িয়েছি। প্রাচীন যুগের সংস্কৃত-ভাষা দিয়ে, এ যুগের সমস্ত অভাব দূর হতে পারে না। সে ভাষা যখন জীবিত ছিল, তখন তার অভিধান হয়ত আমাদের পক্ষে যথেষ্ট ছিল, কিন্তু এখন আর তা নয়এখন বাংলা-ভাষার শব্দকোষ আমাদের কাছে তার চেয়ে ঢের বেশী মূল্যবান। “চট্ট করে মাথায় একটা মতলব এল' সে একদম্ব নীরেট' “নদীর জল তরুতর করছে’, ‘টলমল করছে, “ছলছল করছে? প্ৰভৃতি বাক্যের মধ্যে সংস্কৃত শব্দ আতি অল্প, কিন্তু তা হলেও এটা নিশ্চয় যে, কোন সংস্কৃত বাক্য দিয়ে ঐ অর্থগুলি অতি জুত করে, অত জোরের সঙ্গে প্ৰকাশ করা যেত না । মৃতের শক্তি ও জীবিতের শক্তিতে ঢের প্রভেদ। খাঁটি বাংলা ভাষায় মনের সম্মুখে একটা • স্পষ্ট ছবি এনে দেয় । সংস্কৃত-ভাষা বস্তুর সঙ্গে মনের ব্যবধান দুর করতে পারে না। তাকে মনে মনে আবার সাদা বাংলায় তর্জমা করে নিতে হয়- তাই সংস্কৃত-বাংলা ক্রমশঃ অচল হয়ে আসছে