পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8S 8 어g WSet, be সামঞ্জস্যের সাধনা আছে, এতেই আমরা মিতাচারের দ্বারাই অমিত শক্তির অধিকার পাই। বৌদ্ধধৰ্ম্ম যে মধ্যপথের ধৰ্ম্ম।” শুনে আমার লজ্জাবোধ হয়। বৌদ্ধধৰ্ম্মত আমাদের দেশেও ছিল, কিন্তু আমাদের জীবনযাত্ৰকেত এমন আশ্চৰ্য্য ও সুন্দর সামগুঞ্জস্যে বেঁধে তুলতে পারে নি। আমাদের কল্পনায় ও কাজে এমনতর প্রভূত আতিশয্য, ঔদাসীন্য, উচ্ছ স্থলত কোথা থেকে এল ? একদিন জাপানী নাচ দেখে এলুম। মনে হল এ যেন দেহভঙ্গীর সঙ্গীত। এই সঙ্গীত আমাদের দেশের বীণার আলাপ | অর্থাৎ পদে পদে মীড়। ভঙ্গীবৈচিত্র্যের পরস্পরের মাঝখানে কোনো ফঁাক নেই, কিম্বা কোথাও জোড়ের চিহ্ন দেখা যায় না। ;-সমস্ত দেহ পুষ্পিত লতার মত একসঙ্গে দুলতে দুলতে সৌন্দর্ঘ্যের পুষ্পবৃষ্টি করাচে। খাটি য়ুরোপীয় নাচ আৰ্দ্ধনারীশ্বরের মত, আধখানা ব্যায়াম আধখানা নাচ ; তার মধ্যে লম্ফঝাম্প, ঘুরপাক, আকাশকে লক্ষ্য করে লাথি-ছোড়াছড়ি আছে। জাপানী নাচ একেবারে পরিপূর্ণ নাচ । তার সজার মধ্যে ও লেশমাত্ৰ উলঙ্গতা নেই। অন্য দেশের নাচে দেহের সৌন্দৰ্য্যলীলার সঙ্গে দেহের লালসা মিশ্রিত। এখানে নাচের কোনো ভঙ্গীর মধ্যে লালসার ইসারামাত্র দেখা গেল না । আমার কাছে তার প্রধান কারণ এই বোধ হয় যে, সৌন্দৰ্য্যপ্ৰিয়তা জাপানীর মনে এমন সত্য যে, তার মধ্যে কোনোরকমের মিশল তাদের দরকার হয় না, এবং সহ্যু হয় না। একবার আমাদের দেশের নাচের কথা মনে পড়ল। কিন্তু সুন্দর ছবির উপর দৈবাৎ এক ফোটা কালী পড়লে মনটা যেমন ছ্যাক করে ওঠে, আমার সেইরকম মনে হলতাড়াতাড়ি সেই কদৰ্য্য স্মৃতি ধুয়ে মুছে সাফ করে ফেলুম।