পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

BUA, ʼ সবুজ পত্ৰ Onsidige, Seve দিন তিনি, তঁর কৰ্ম্মস্থলে, তারে খবর পেলেন যে বীরেন্দ্ৰলাল কোন পলিটিকাল অপরাধে কলকাতায় গ্রেপ্তার হয়েছে। সেই সঙ্গে তঁর বাড়ী ও খানাতল্লাসা হ’ল। তঁর ছেলের যে কস্মিনকালে ফৌজদারি আদালতে বিচার হতে পারে, এ কথা তিনি কখন স্বপ্নে ও ভাবেন নি । সুতরাং এ সংবাদে তিনি একেবারে হতবুদ্ধি হয়ে পড়লেন। ব্যাপারটা তঁর কাছে এতই নতুন লাগিল যে, এ ক্ষেত্রে তঁর কি করা কর্তব্য তিনি ঠাউরে উঠতে পারলেন না ; কেননা নূতনের সঙ্গে কারবার করবার অভ্যাস। তঁর ছিল না । কাজেই তাকে তঁর মেয়ের পরামর্শমত চলতে হল। তিনি উকীল কৌস্তুলি দিয়ে বীরেন্দ্রলালকে রক্ষা করবার চেষ্টা করলেন। ফলে, তঁর ছেলে রক্ষা পেলে না ; মধ্যে থেকে তঁর যা কিছু টাকা ছিল, সব উকীল কেঁৗসুলির পকেটে গেল। এই নতুনের সংঘর্ষে শ্যামলালের জীবনের জোড়া-সুখস্বপ্নের মধ্যে একটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল, আর তঁর কন্যার ফুটন্ত ফুলের মত মনটির উপর বরফ পড়ে গেল । এর পরে শ্যামলালের দেহমানে এমন অবসাদ, এমন জড়তা এসে পড়লে যে, তার পক্ষে আর কাজ করা সম্ভব হালনা । তিনি এক বৎসরের ছুটির দরখাস্ত করলেন ; এবং সে দরখাস্ত তখনই মঞ্জুর হল। কেননা উপরওয়ালাদের মতে, তঁর ছেলের মতিভ্ৰংশতার জন্য শ্যামলাল ও যে কতকটা দায়ী, তার প্রমাণ তঁর ঘরের বই। এ শুনে শ্যামলাল অবাক হয়ে গেলেন । তিনি জানতেন হিষ্টরি হচ্ছে শুধু পড়বার জিনিস, মানুষের জীবনের সঙ্গে তার যে কোন যোগাযোগ থাকতে পারে, এ কথা পুর্বে কখন তার মনে হয় নি ।