পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

pi - সবুজ পত্র - , 6M, 900 আবদ্ধ রাখতেই চেয়েছেন। দুঃখের বিষয় এ দেশের পেশাদার ওস্তাদের, সঙ্গীত ছাড়া অপরাপর বিষয় শিক্ষাদীক্ষা এতই কম যে, কিসে সঙ্গীতের উন্নতি হয় বা জনসাধারণের মধ্যে তার প্রচার হয়, সে সম্বন্ধে তাদের ভাববার আবশ্যক বোধ হয়। কিনা সন্দেহ। অপরপক্ষে এও বলতে হয় যে, পুরাকালের রাজারাজড় বড়লোক তঁাদের যে-ভাবে প্ৰতিপালন ও সমাদর করতেন, একালে সে সম্মান ও সাহায্য লাভে তঁরা বঞ্চিত হওয়ায়, দারিদ্র্যবশতঃ অন্নচিন্তাতেই তাদের সমস্ত মন দিতে হয় । তারপরে সেকালে স্বরলিপি করবার পদ্ধতি না থাকায়, ওস্তাদিদের স্মরণশক্তির উপর এতটা নির্ভর করতে হয় যে, তঁরা সঙ্গীতের শাস্ত্ৰবিধি সম্বন্ধে হিন্দু-বিধবার মত শুদ্ধাচারী ও শুচিবায়ুগ্ৰস্ত হয়ে পড়েছেন। পাছে মুখস্থ বিদ্যার কোন ব্যতিক্রম ঘটে, পাছে অমুক আইনের অমুক ধারা অনুসারে দণ্ডনীয় হন, এই ভয়ে তঁরা নিজেও অস্থির, এবং দেশসুদ্ধ লোককেও অস্থির করে তুলেছেন। ওস্তাদী গানের প্রতি সাধারণ অভক্তির আর এক কারণ,-ওস্তাদদের কায়দাকানুন। তঁদের অনাবশ্যক মুখভঙ্গী, হাস্যকর অঙ্গভঙ্গী,- এক কথায় মুদ্রাদোষ, এবং পরস্পরের কূটতর্কে,-যা’ প্ৰশস্ত সুন্দর রাজপথ হওয়া উচিত, তাকে এমনি কণ্টকিত জটিলারণ্যে পরিণত করেছেন যে, পথ-চলতি লোকের পাশ কাটিয়ে যাওয়া কিছু বিচিত্র নয়। বিদ্যামাত্রেরই একটা মজুরী ও শিক্ষানবিশী আছে,-তা অর্থকরীই হোক আর সৌখীনই হোক। কিন্তু শিক্ষার চরম ফলের মধ্যে তার প্রথম শুষ্ক কঠিন অংশের সমস্ত চিহ্ন লোপ পাওয়া উচিত,- যেমন চাষের ফলে নগ্ন রুক্ষম ভূমি স্বৰ্গশস্যের মসৃণ রঙীন আস্তরণ