পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় বর্ষ, দশম সংখ্যা “নতুন-কিছু” (V) দিয়ে । কিন্তু এ আবরণটা যে কত পাৎলা, কত শতছিদ্র তা” আমরা দেখেও দেখছিনে। রক্ষণ-শীলতার গো আমাদের মোটেই নেই। আমাদের সমাজজোড়া, দেশজোড়া আছে-ঘোর তামসিকতা ! কোথায় আমরা রক্ষণ-শীল ? সর্বত্রই ত” আমরা অতি মাত্রায় অনুকরণ প্ৰিয় । সর্বদাই ত” আমরা রাম-রহিমে মিলেয়ে একটা খিচুড়ী পাকিয়ে, নিজের নিজের জান বাঁচিয়ে দিন গুজরাণেরই পক্ষপাতী। কেবল যেখানেই আমাদের গায়ে আঁচড় লাগার সম্ভাবনা রয়েছে ; যেখানেই আমাদের কঁচাম্বুম ভাঙ্গাবার চেষ্টা হয়েছে সেখানেই আমরা রক্ষণ-শীল বনে’ গেছি!! যখন রক্ষা করবার জিনিস আমাদের প্রচুর ছিল, তখন আমরা হয়ে পড়েছিলাম বিশ্ব প্রেমিক; আর এখন, যখন আমাদের সবই চাই-আমরা হয়েছি। রক্ষণ-শীল । আমাদের সেই বিশ্বপ্ৰেম আর এই রক্ষণ-শীলতা দুইই হচ্ছে একই জিনিসের এ-পিঠ আর ও-পিঠ। ( অতিরিক্ত বিশ্বপ্রেমের বন্যায় নিজের জাতীয়তা ভাসিয়ে দেওয়া, কিংবা জাতীয় মনের দুয়ার বন্ধ-করে” তার সামনে রক্ষণ-শীলতার পাহারা বসান, দুই-ই জাতির পক্ষে সমান অকল্যাণ। এ দু'টো দোষই আমরা সমান আয়ত্ত্ব করে নিয়েছি। আপাততঃ, তাতে করে” আমাদের ইবিধে হয়েছে এই যে,-কারো কাছেই আমাদের ঠাকুতে হয় না ! যখনি কেউ আমাদের জাতীয়তার দিকে অঙ্গুলি-নির্দেশ করে, তখনি আমরা সাজি বিশ্ব-প্রেমিক ; আর, যখনি আমাদের সামাজিক রীতি নীতি নিয়ে কথা ওঠে-তখনি আমরা হই রক্ষণ-শীল ! বাতাস পেলে আমরা পাল তুলি, আবার দরকার হ’লে গুণেও নামি, কিন্তু নৌকা আর শামীদের এগোয় না। কারণ, বাধনটার পরে আমাদের অসাধারণ মায় । সেটা কাটুতে আমাদের বড়ই বাজে। ዓ 8