পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Cys সবুজ পত্ৰ v, Yvore পৰ্যন্ত আমরা নিরপেক্ষ ভাবে ভারতবর্ষের ইতিহাস চর্চা করিনি, তা নাহলে আমরা জানতুম যে মুসলমান শাসনের ফলে ভারতবাসীর রাষ্ট্রীয় জীবন কিছুমাত্র ক্ষুন্ন হয়নি। এই ইতিহাস পড়ে শুধু এই কথাই আমাদের মনে হয়, যে হিন্দু-যুগে একটি বিরাট অশান্তি এবং অরাজকতা ভীষণ দুঃস্বপ্নের মতন সমস্ত দেশের উপর চেপেছিল। এই অরাজকতা ( যাকে খালিমপুরের তাম্রশাসনে মৎস্যন্যায় বলা হয়েছে।) দূর করবার জন্য গৌড়ীয় প্ৰজাবৃন্দ দায়িতবিষ্ণুর পৌত্র এবং বপ্যাটের পুত্ৰ গোপালকে বাংলা-দেশের রাজপদে বরণ করে। পালরাজগণ অনুন সাড়ে চারশ বৎসর বঙ্গাঙ্গমগধে রাজত্ব করেন, কিন্তু এই কালে বাঙ্গালী যে বিশেষ শান্তিতে ছিল না, তা রাখালবাবু আমাদের পরিষ্কার করে দেখিয়ে দিয়েছেন । পশ্চিম হতে গুর্জর এবং কাকুজের রাজাগণ দক্ষিণ হতে রাষ্ট্রকুট এবং উড়িষ্য’র চোল বংশীয় নরপতিগণ পূর্ব হতে কামরূপের রাজা, উত্তর হতে কাম্বোজরাজ উপযুপরি আক্রমণ করে বাংলা-দেশকে বিব্রত করে তুলেছিলেন। এই পাঁচশ বৎসর যাবৎ, যে রাষ্ট্রীয় বিপ্লব চলছিল তাতে কখনও দেশে শান্তি এবং সুশাসন সম্ভবপর ছিল না। আৰ্য্যাবৰ্ত্তে যখন হর্ষবন্ধন সম্রাট ছিলেন তখন চীন শ্রমণ ইয়ুন চুথাঙের ভ্রমণ বৃত্তান্ত থেকে দেশে অশাস্তির কথা জানতে পাই । তঁর মৃত্যুর পরে ত্ৰয়োদশ শতাব্দীর আরম্ভ পৰ্যন্ত ভারতবর্ষ যেরূপ অন্তযুদ্ধদ্বারা পীড়িত হয়েছিল তাতে সহজেই অনুমান করা যেতে পারে যে শুধু বাংলা-দেশ কেন, ভারতবর্ষের কোন দেশেই শান্তি এবং সুশাসন ছিল না। এই ঘোর অরাজকতার দিনে মুসলমানগণ উত্তর পশ্চিমের পার্বত্যপথ ভেদ করে আর্য্যাবৰ্ত্তে তঁদের অৰ্দ্ধচন্দ্রাঙ্কিত পতাকাকে সুদৃঢ় রূপে