পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় বর্ষ, দশম সংখ্যা তারিখের শাসন (Ryo সেখানে আমরা সকলেই কেমন বেমানান হাতুম। এসব যে এখন অসম্ভব হয়ে উঠেছে তার একটি কারণ হচ্ছে তখন সময় আমাদের ভূত্য ছিল এখন আমরা সময়ের ভৃত্য। বিংশ শতাব্দীতে মানুষ জড়-প্ৰকৃতিকে জয় করতে গিয়ে কেবল যে জড়-প্ৰকৃতির দাস হয়েছে তাই নয় সময় নামক না-জড় না-চেতন না-সূক্ষম না-স্কুল এক অদ্ভুত পদার্থের দাস হয়েছে এবং তার ফলে জীবনযাত্ৰা পূর্বের চেয়ে অনেক পরিমাণে শ্ৰীহীন হয়ে পড়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভিড় ঠেলে যখন যেতে হবে, তখন গলায় মালা পরাও চলে না, হন্তে বলয় রাখাও চলে না—তখন গায়ে চন্দন লেপন নিতান্তই বাহুল্য কারণ ঘৰ্ম্মাক্তি কলেবরে সে চন্দন থাকবে না । এ সব ইত্যরতার মূলই হচ্ছে সময়ের যে মূল্য আছে এই জ্ঞান—এবং এ জ্ঞান আমরা পাশ্চাত্য সভ্যতার সংস্পর্শেই লাভ করেছি। ( 又 ) সময়ের মূল্যজ্ঞান থেকে আমরা আর একটি গুণের সন্ধান পেয়েছি-সেটির নাম হচ্ছে Punctuality । ইংরেজ বলেন Punctuality is a virtue । কিন্তু সুখের বিষয় এই যে আমাদের এই পুণ্যালোভাতুর দেশেও পুণ্যসঞ্চায়ের এত সহজ উপায়টা কারো মনে ইতিপূর্বে আসেনি। সাতটার সময়ে আসব বলে ঠিক সাতটায় এলেই যে পুণ্য অর্জন করা যায়—এটা দেশের দুরবস্থার আলোচনার সময়ে যতই স্বীকার করি না কেন আমাদের মন তা কিছুতেই মানতে চায় না-তাই ও পুণ্যটার সম্বন্ধে আমরা একেবারে নির্লোেভ।