পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সকল মানব হইতে তাহাকে বিশিষ্ট করিয়া রাখে। অধিকাংশ সুময়েই অনুকরণপ্ৰিয়তা ও শিক্ষার চাপে তাহার এই নিজস্ব গুণগুলি অফুটন্ত অবস্থায় থাকিয়া যায় । আমরা আমাদের সন্তানগুলিকে নিজেদের ছাঁচে গড়িয়া তুলিতে চাই, কাজেই শিশুর প্রকৃতিগত বৈলক্ষণ্যটী আমাদের চোখে বিসদৃশ লাগে। এবং সেইজন্য সেটাকে দমন করিবার নানারূপ চেষ্টা করিয়া থাকি, ইহার ফল। এই হয় যে, যে বিশেষ একটী গুণ লইয়া শিশু জন্ম করিয়াছিল, যে গুণাটী প্ৰস্ফুটিত হইলে সে অন্যান্য জনসাধারণের সমক্ষে মাথা উচু করিয়া চলিতে পারিত, অন্ধুরাবস্থাতেই আমরা সেটিকে নষ্ট করিয়া সাধারণের সহিত তাহাকে একসার করিয়া দি। গৃহপালিত পশু পক্ষীদিগের মধ্যেও আমরা নির্বাচন করিয়া তাহাদিগের জাতি ও শ্রেণীর উন্নতির চেষ্টা করিয়া থাকি কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে আমাদের নিজেদের সন্তানের সময় ঐ রূপ নিৰ্বাচনের যে কোন বিশেষ প্রয়োজনীয়তা আছে তাহা ভুলিয়া যাই। পশুপক্ষীদিগের নির্বাচন তাহাদিগের শারীরিক গঠনের উপর নির্ভর করে, মানবশিশুর নির্বাচন তাহদিগের বুদ্ধি ও মনোবৃত্তি সকলের বিকাশের উপর নির্ভর করে। যাহার যে গুণটী বিশেষ ভাবে লক্ষিত হয় সেই গুণাটীর উৎকর্ষসাধনের চেষ্টা করিতে হইবে । শৈশবের প্রথম কয়েক বৎসর শিশুকে শিক্ষার কৃত্রিমতার মধ্যে আনিতে চেষ্টা না করিয়া তাহার নিজের হাতে ছাড়িয়া দিলে তাহার কোন শক্তি বা কোন মনোবৃত্তি বিশেষরূপে পরিবৰ্দ্ধিত হইয়াছে তাহা সহজেই বুঝা যায় এবং তখন সেইটীর উৎকর্ষসাধনও বড় কঠিন হয় না । জাতীয় উন্নতি সাধন করিতে হুইলে আমাদিগের মধ্যে যে গুণগুলির অভাব লক্ষিত হয়। সেই সকল