পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

92 সবুজ পত্ৰ झुन्. १७२७ সম্প্রতি এ দেশের ইংরাজি-কাগজওয়ালারা আমাদের, শিক্ষার উপর কলমের খোচা দিতে সুরু করেছেন এবং তাতে আমরা অস্থির হয়ে উঠেছি। আমি পূর্বেই বলেছি খোচ খেয়ে খিচুনিটে দেহমনের স্বাস্থ্যের লক্ষণ নয় । পরনিন্দ পরখ করে দেখলে, দেখতে পাওয়া যায় যে, তা প্ৰায়ই নেহাৎ বাজারে জিনিস । সে যাই হোক আমাদের শিক্ষিত-সম্প্রদায়কে মনে রাখতে হবে যে, আমাদের কপালে লোকে-লোক-লাঞ্ছনা ও ঘরে গুরুগঞ্জন দুই লেখা আছে। এই ডাইনে বঁায়ে আক্রমণের ভিতর দিয়ে-আমাদের জাতীয় জীবনের নূতন পথ কেটে বেরিয়ে যেতে হবে। সে শক্তি যদি আমাদের না থাকে ত আমরা যথার্থ শিক্ষিত নই। কেননা যে জ্ঞান বিজ্ঞান মানুষের আত্মশক্তিকে প্রবুদ্ধ না করে, তা শুধু বিদ্যার পাপের বোঝা। আর তা ছাড়া আমরা আজকাল যে নিন্দার ভাগী হয়ে পড়েছি তার ওজন যতই বেশী হোক, তার মূল্য যাচাই সাপেক্ষ। আমাদের শিক্ষার উপর একদল ইংরাজ এই কারণে নারাজ যে তার ফলে আমরা এ দেশের প্রচলিত রাষ্ট্ৰতন্ত্রের বদল চাই আর আমাদের গুরুজনদের মধ্যে একদল এই কারণে নারাজ যে, আমরা এ দেশের প্রচলিত সমাজ-তন্ত্রের বদল চাই। এরা উভয়েই চান যে আমরা শিক্ষা পাব নতুন কিন্তু আমাদের মন থেকে যাবে সনাতন। এক কথায় এর চান যে বাঙ্গালী তার মনের আবাদ করবে-কিন্তু তাতে কোনও ফসল ফলবে না। শিক্ষার এ রকম যদি কোনও আদর্শ পদ্ধতি থাকে ত মানব-সমাজ আজ পৰ্যন্ত তা আবিষ্কার করতে পারে নি। " আর যদি কস্মিনকালে পারে ত বাঙ্গলাদেশে তা বিশেষ কাজে লাগবে না ; কেননা বাঙ্গালীর দেশের মত বাঙ্গালীর মনও মরুভূমি