পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)বর্ষ, ፵ኮፕጫ ጓSቑr! ভাষার কথা ASV א9א দেখি তাহ সংস্কৃত-ভাষা, কেবল তাহাকে বাংলার নামে চালাইবার জন্য কিছু সামান্য পরিমাণে তাহাতে বাংলার খাদ মিশাল করা হইয়াছে। এ এক রকম ঠকানো। বিদেশীর কাছে এ প্রতারণা সহজেই চলিয়াছিল । যদি কেবল ইংরেজকে বাংলা শিখাইবার জন্যই বাংলা গদ্যের ব্যবহার হইত, তবে সেই মেকি-বাংলার ফাকি আজ পৰ্য্যন্ত ধরা পড়িত না.। কিন্তু এই গদ্য যতই বাঙালীর ব্যবহারে আসিয়াছে ততই তাহার রূপ পরিবর্তন হইয়াছে। এই পরিবর্তনের গতি কোন দিকে ? প্ৰাকৃত বাংলার দিকে । আজ পৰ্য্যন্ত বাংলা গদ্য, সংস্কৃত-ভাষার বাধা ভেদ করিয়া, নিজের যথার্থ আকৃতি ও প্ৰকৃতি প্ৰকাশ করিবার জন্য যুঝিয়া আসিতেছে। অল্প মূলধনে ব্যবসা আরম্ভ করিয়া ক্রমশ মুনফার সঙ্গে সঙ্গে মূল ধনকে বাড়াইয়া তোলা, ইহাই ব্যবসার স্বাভাবিক প্ৰণালী । কিন্তু বাংলা-গদ্যের ব্যবসা মূলধন লইয়া সুরু হয়ী নাই, মস্ত একটা দেন। লইয়া তার সুৰু। সেই দেনাটা খোলসা করিয়া দিয়া স্বাধীন হইয়া উঠিবার জন্যই তাহার চেষ্টা । আমাদের পুথির ভাষার সঙ্গে কথার ভাষার মিলন ঘটিতে এত বাধা কেন, তাহার কারণ আছে। যে গদ্যে বাঙালী কথাবাৰ্ত্ত কয় সে গদ্য বাঙালীর মনোবিকাশের সঙ্গে তালরাখিয়া চলিয়া আসিয়াছে। সাধারণত বাঙালী যেবিষয় ও যে ভাব লইয়া সর্বদা আলোচনা করিয়াছে বাংলার চলিত গদ্য সেই মাপেরই। জলের পরিমাণ যতটা, নদীপথের গভীরতা ও বিস্তার সেই অনুসারেই হইয়া থাকে। স্বয়ং ভগীরথও আগে লম্বী চওড়া পথ কাটিয়া তাহার পরে গঙ্গাকে নামাইয়া আনেন নাই।