পাতা:সবুজ পত্র (দ্বিতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(to সবুজ পত্ৰ । veya:Rifi, “YORR আকারে, নানা ভঙ্গীতে দেখা দিয়েছে। এক ভাষা ব্যতীত এ সাহিত্যের অপর কোনই ঐক্য নেই। বৈদিক সাহিত্যের কথা ছেড়ে দিলেও সংস্কৃত সাহিত্য প্রথমতঃ প্ৰাচীন এবং নব্য এই দুই পৰ্য্যায়ে বিভক্ত। কাব্য বল, অলঙ্কার বল, দর্শন বল, সব এই দুই শ্রেণীভুক্ত। তা ছাড়া দেশভেদে, রচনারীতিরও বহুতর প্রভেদ ছিল। এই নানা রীতির মধ্যে অন্ততঃ এমন দুটি রীতি ছিল, যার একটি আর-একটির সম্পূর্ণ বিপরীত। দণ্ডী বলেছেন যে, যে-সকল গুণের সন্তাবে বৈদভীরীতির সৃষ্টি হয়। সেই সকল গুণের বিপৰ্য্যয়েই গৌড়ীয়রীতির জন্ম। শুধু দণ্ডী নয়, বামনাচাৰ্য্য প্ৰভৃতি সকল প্ৰাচীন আলঙ্কারিকেরা এ বিষয়ে একমত। শব্দাড়ম্বর, অনুপ্রাসের ঘনঘটা, সমাসবহুলতা, অপ্ৰসিদ্ধার্থক শব্দের প্রয়োগ, অত্যুক্তি, পুনরুক্তি এই সবই হচ্ছে গৌড়ীয়রীতির সম্বল ও সম্পদ। এ গৌড় কোন গৌড় তা কারও জানা নেই, কেননা সেকালে ভারতবর্ষে পঞ্চগৌড় ছিল। তবু এই নামের গুণেই , বাঙ্গালী আজ গৌড়ীয়রীতিকে আত্মসাৎ করবার চেষ্টা করছে। কিন্তু কৃতকাৰ্য্য হতে পারছে না। এক মেঘনাদবধ-কার ব্যতীত অদ্যাবধি আর কেউ এ রীতিতে কৃতিত্ব লাভ করতে পারেন নি। আমরা গদ্য রচনায় যে রীতি অবলম্বন করেচি সে হচ্ছে ইঙ্গ-গৌড়ীয়রীতি-কেননা ইংরাজি গদ্যের অনুকরণ এবং অনুবাদ থেকেই বাঙ্গলা গদ্যের উৎপত্তি । এক্ষেত্রে লেখার একটা নূতন পথ ধরবার ইচ্ছে হওয়াটা কারও কারও পক্ষে স্বাভাবিক। প্ৰচলিত পদ্ধতি ত্যাগ করে নূতন পদ্ধতি অবলম্বন করবার মুখে মহাতৰ্ক উপস্থিত হয়। আজকে বাজলা সাহিত্যে সেই তর্ক উঠেছে অর্থাৎ অলঙ্কারের সূত্রপাত হয়েছে ।