পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা নববিদ্যালয় ১৪১ সত্যের সঙ্গে লুকোচুরি ছাড়া আর কি খেলছেন ? ছেলেবেলায় ছেলেদের সঙ্গে স্বচ্ছন্দে লুকোচুরি খেললে, আমরা বড় হলে বিশ্বের সঙ্গে স্বচ্ছন্দে লুকোচুরি খেলতে পারব। যাঁরা দর্শনবিজ্ঞানের ধার ধারেন না, তাদের পক্ষেও এ খেলায় অভ্যস্ত হওয়া একান্ত প্রয়ােজন। সামাজিক জীবনে মানুষে লুকোচুরি ছাড়া আর কি খেলে? রামায় প্রায়, প্রভু ভৃত্যে, স্ত্রী পুরুষে চিরদিন ত ঐ খেলাই খেলে আসছে ;—অতএব দাড়াল এই যে, শিশুদের খেলায় বাধা দেওয়া শিক্ষকের পক্ষে অকৰ্ত্তব্য। তারপর তাদের কোনরূপ খেলা শেখানােও শিক্ষকের কর্তব্য নয়। অধ্যাপক ফারিয়া বলেন, শিশুদের খেলা একটু লক্ষ্য করে দেখলেই দেখা যায় যে, তারা নিত্য নতুন খেলা খেলে। তারা কল্পনা-রাজ্যের অধিবাসী বলে, এ বিষয়ে তাদের উদ্ভাবনী শক্তি অসীম। তাদের কল্পনাকে তারা এবেলা ওবেলা খেলার রাজ্যে বাস্তব করে তােলে। এতেই তাদের আর্টিষ্টিক শক্তির চরিতার্থতা। সুতরাং খেলার ক্ষেত্রে তাদের একেবারে ছেড়ে দিলে আমরা যে তাদের শরীরকে জখম করি, শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে তাদের বৈজ্ঞানিক বুদ্ধিকে ভোতা করি-আর্টিষ্টিক শক্তিকে চেপে দিই। এ সব কথা যদি সত্য হয়, তাহলে :- উঠ শিশু মুখ ধােও, পর নিজ বেশ, আপন পাঠেতে মন করহ নিবেশ” এই শ্লোকটি হতে পাঠেতে” শব্দটি বহিষ্কৃত করে দিয়ে তার হলে “খেলায় বসিয়ে দেওয়া সঙ্গত। ভােরের বেলায় শিশুরাও যদি সাদা কাগজের উপর কালির আঁচড়ের প্রতি মনােনিবেশ করে, তাহলে কার জন্যই বা “পাখী সব করে রব” আর কিসের জন্যই বা