পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ম বৰ, তৃতীয় সংখ্যা দু-দুবার বোকবে না, তাকে বারণ করবে না, তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে না। কথা কও না যে !” “আমি কি বলবো?”, আমার কান্না পেতে লাগলাে কোন কথা বললুম না-বুঝলুম আর ফেরাবার উপায় নেই। নিজেই আমি তাকে দূর করে দিয়েছি নিতেই আমি তার এবং আমার মাঝখানে এমন একটা দুর্লঙ্গ প্রাচীর গেঁথে তুলেছি যা ডিঙ্গিয়ে আসার মত ক্ষমতা তার আদবেই নেই। এমনি করে এই দূরের জিনিষটিকে কাছে আনবার ব্যর্থ চেষ্টার বিড়ম্বনার ফাক দিয়ে আরও দশ বার বৎসর গলে চলে গেল। তারপর কি জানি কার ইসারায় এই দূরের জিনিসটি সহসা একদিন এত দূরে চলে গেল যে তার চিহু পৰ্যন্ত আর খুজে পাওয়া গেল না। নীরা চলে যেতে সমস্ত শরীরটায় হাত বুলিয়ে বুলিয়ে দেখলুম কোন খানটায় সে তার অভাব রেখে গেছে। বুকে হাত দিলুম ; না সেখানে ত কোন নূতন অভাব নেই; মাথায় হাত দিলুম-সেখানেও ভাই, কিন্তু পায়ে হাত দিতে সর্বাঙ্গ শিউরে উঠল ; এই খানেই যে সে তার সমস্ত অভাব রেখে গেছে। পা-টেপবার লােকের অভাবই ত সে তার চলে যাবার পথের মধ্যে রেখে গেছে। বুকে হাত বুলোর অভাব পূরণ করবার জন্যে সে আসে নি, তাই সেখানটার অভাব আগেও যেমন ছিল এখনও ঠিক তেমনিই রয়ে গেছে একটু এদিক ওদিক হয়নি। আমার জীবনে এই প্রথম যৌবনারম্ভ। এই প্রথম যৌবন তার রত্নসিংহাসন বুকের মাঝখানে হিড়হিড় করে টানতে টানতে এনে বসিয়ে দিয়ে গেল, আর সঙ্গে কোথা হতে ধূপ ধুনা জ্বলে উঠলো এক জনকে বরণ করে নেবার জন্যে সেই মসনদের কিংখাপের উপর।