পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা প্র্যাকটিকাল অধ্যাপকেরা শিক্ষার বিষয় যে দেশের ঠিক মনােভাবই প্রকাশ করেছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। যেদিন ইয়ােরােপ বাষ্প-দৈত্যটাকে বশ করার মন্ত্র লাভ করলে, সেদিন এসিয়া পড়ল একদম পিছিয়ে। আর ইয়োরােপের বাণিজ্য তরীতে নীলসাগর ভরে গেল, দেশ দেশান্তর থেকে মণি মুক্তা সঞ্চয় করে ইয়ােরোপের অধিবাসীরা তাদের মাতৃভূমিকে সমৃদ্ধ ও সুসজ্জিত করলে। তার শতন্ত্রী কামান, তার দ্রব্য সম্ভার, তার রণতরী, তার আত্মশ্লাঘা, তার অসীম প্রতাপ আমাদের চমক লাগিয়ে দিল। আমরা ভাবলুম ইয়ােরােপ যখন বাণিজ্য-লব্ধ অর্থ দ্বারা বড় হয়েছে অতএব আমরা যদি বড় হতে চাই তবে আমাদেরও ব্যবসা বাণিজ্য করতে হবে—ও ভিন্ন উপায় নাই। অতএব দূর করে দাও তােমার সাহিত্য, তোমার কাব্য, তােমার দর্শন। যাতে করে আমরা জাতকে জাত কামার কি তঁাতি হয়ে উঠতে পারি তাই কর। এমনি রই ইয়ােররাপের দৃষ্টান্ত আমাদের মনকে বিগড়ে দিচ্ছে। খবরের কাগজে বক্তৃতায় আধ্যাত্মিকতা নিয়ে আমাদের গর্বের ত অন্ত নেই অথচ দেখি ভবিষ্যৎ আদর্শ স্থির করবার বেলায় সবাই বলেন রেখে দাও তোমার আধ্যাত্মিকতা, ওই করেই ত এই হয়েছে, এখন কি করে একদিন সমস্ত পৃথিবীর সকল বাজার আমরা একচেটে করব সেই কথা ভাব। সবাই বলছি দেশের লােককে কাজের লােক করে তুলতে হবে। এই ত দেখতে পাচ্ছি ব্যবসা শেখাবার এন্তে বিশ্ব- বিদ্যালয় নূতন আয়ােজন করা স্থির করেছে। এই অর্থের প্রয়োজন এবং সেই নিমিত্ত ব্যবসার প্রয়ােজনকে আমি অবহেলা করছি না কিন্তু আমি জিজ্ঞাসা করি পাট কেনাবেচার কৌশল শেখা উচ্চ শিক্ষার