পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭২ সবুজ পত্র আষাঢ়, ১৩২৫ অশােক বনে বন্দিনী সীতার কাহিনীও তারা শুনেছে—রামচন্দ্রের পিতৃভক্তি, সীতার সতীত্ব, অর্জুনের শোৰ্য তাদের কাছে কাহিনী মাত্র নয়-তঁাদের স্মৃতি অলক্ষ্যে তাদের মনকে যুগপৎ কোমল ও উজ্জ্বল করে তুলেছে। তাই এত যে পঙ্কিলতা তবু হরিসংকীৰ্ত্তনে লােক জোটে; যাত্রাগানে, ধ্রুব-উপাখ্যান ভালই লাগে। বিশ্ববিদ্যা- লয়ের শিক্ষাই হােক আর প্রাথমিক শিক্ষাই হােক ব্যবসার আদর্শে শিক্ষাকে ছােট করে দিলে, দেশের মঙ্গল হবে না, কারণ তাতে দেশের মন ক্রমশ ইতর হয়ে পড়বে। কাজের একটা ভীষণ আদর্শ চোখের সামনে রাখতে যে কেবল শিক্ষার আদর্শকে ছােট করে দিয়েছি তা নয়-বাংলাদেশের মনে সকল ব্যাপারেই একটা আক্ষেপ উঠেছে যে, এখানে লেখক পাওয়া যায়, কবি ত খুবই সুলভ, বক্তা সবাই, কিন্তু যাকে বলে practical, business-man তা পাওয়া সহজ নয়। আক্ষেপ করে এই কথা বলি যে, এই যে এত বড় স্বদেশীর ঢেউটা এল,—কি হল তাতে ? আর দেখ দেখি বােম্বাই, মিল বসিয়ে কেমন লাভ করছে, বাঙ্গালী বক্তৃতা দিলে গান গাইলে, বাস হয়ে গেল সব। এই সব লােক হয়ত একদিন এই বলে আক্ষেপ করবেন যে, সূর্যের আলাে ধরে তারা তাদের গাস্থ্যের চুললটি জ্বালাতে পারছেন না। এই practical eficiency প্রভৃতির মােহ যতদিন ধরেছে, ততদিন থেকে যেমন কাজের উপর শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে অমনি আফিসের উপর শ্রদ্ধাও বেড়ে গেছে। আফিস আমাদের মন হরণ করেছে কারণ আমরা ভাবি যে, ঐ আফিস করার গুণেই ইংরেজ এত বড়। অথচ এই efficiency-টাই বা কি? দশটা থেকে পাঁচটা