পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের ডাক। সাঁইত্রিশ বৎসর বয়সে দক্ষিণা যখন পুত্র সন্তানটী প্রসব করলে তখন তাদের সেই এতদিনকার বিষাদঘেরা কুটীর খানি আনন্দের আলােতে হেসে উঠল। সাগরের কিনারে তাদের কুটীর। আবহমান- কাল থেকেই ত নীলাম্বরাশি উচ্ছসিত—সৃষ্টি হতেই ত তার তরঙ্গমালা কল কল ছল ছল মুখর—আজও তাই। তবে সে তরঙ্গমালার কল কল ধ্বনিতে আজ এত আনন্দ-মদিরা ঢেলে দিলে কে ? নীলাম্বুরাশির সে উচ্ছাস আজ এত হাস্য-মুখরিত হয়ে উঠল কেন ? কুটীরের আশে পাশে তালবৃক্ষের সারি। বাতাসে তালবৃন্ত থিম্ থির করে কাপছে—কিন্তু তা আজ এত উল্লাস-যুক্ত হ’ল কোন্ মন্ত্রে ? দক্ষিণা যখন তার সায়ত্রিশ বৎসর বয়সে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করুল তখন এমনি করে মৎসজীবীর সেই নির্জন শান্ত অথচ বিষাদমাখা কুটীর খানি, আকাশ বাতাস দশদিক ভরে একেবারে হেসে উঠল। দক্ষিণা যখন পুত্র সন্তানটি প্রসব করূলে তখন শ্ৰীমন্তের হৃদয়খানি ভওিতে ভরে উঠল এবং তারই আলােক তার চক্ষু দুটিকে উদ্ভাসিত করে তুলল। দেবতার দয়া তার অন্তরের অন্তস্থলে গিয়ে স্পর্শ করে মন্তের জীবনকে এক মুহূর্তে কৃতার্থ করে দিল। জোড়করে আকাশের পানে চেয়ে গদগদভাষে শ্ৰীমন্ত বলল—“দেখাে ঠাকুর। আমার খােকাকে যেন বাঁচিয়ে রেখ-দেখো যেন আকাশের চাঁদ হাতে