পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবুজ পত্র আষাঢ়, ১৩২৫ নেই। দিয়ে আবার তা কেড়ে নিয়ে না”-শ্ৰীমন্তের মুখে আর কথা সরুল না —তার কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে এল—অন্তরের ভাব, ভাষা খুঁজে পেলে না। যথাসময়ে অন্নপ্রাশনের সঙ্গে শিশুর নামকরণ হয়ে গেল। দেবতার দান বলে তার নাম রাখা হ’ল প্রসাদ। যেদিন শিশু প্রথম আধ আধ কথায় মা ও বাবা ডাকতে শিখল, সেদিন দক্ষিণা ও শ্ৰীমন্তের বুকের ভিতরটা অাশায় আনন্দে কেঁপে উঠল—এবং সঙ্গে সঙ্গে তাদের চোখের সামনে একটা নতুন জগৎ খুলে গেল। যে জগতে পিতৃ-মাতৃ হৃদয়ে এত স্নেহ এত ভালবাসা—সে-জগতের ত কঠোর হবার অবসর যে সংসারে শিশু রয়েছে—তার আধ আধ কথা রয়েছে- কালো চোখের হাসিমাখা দৃষ্টি রয়েছে—সে সংসারের ত নির্মম হবার সাহস নেই। শ্ৰীমন্তের মরুভূমির মতাে সংসার এক মুহূর্তে যেন মন্দাকিণীর প্রবাহে মদল শােভিত হয়ে গেল। আর সে ক্লান্তি নেই, দুঃখ নেই, দৈন্য নেই--আর সে ব্যর্থতা নেই। শিশুর অনিন্দ- ময় স্পর্শে সমস্তই ধন্য ও সার্থক হয়ে উঠল। প্রতিদিনের কাজগুলো যা এতদিন শ্ৰীমন্ত ও দক্ষিণার কঁাধে ভূতের বােঝার মতো চেপে তাদের জীবনকে এখানে সেখানে নির্মম ভাবে টেনে নিয়ে বেড়াত, সেভার শুধু একটা মাত্র শিশুর আবির্ভাবে একেবারে লঘু হয়ে গেল। শ্ৰীমন্ত যখন জাল কাঁধে নিয়ে মাছ মারুতে যায় তখন তার হৃদয়টা সমুদ্রের ঢেউয়ের মতই আজকাল নৃত্য কতে থাকে—এম তখন ভাবে যে এই দিনমানব্যাপী পরিশ্রমের যে পুরস্কার, সে-পুরস্কার এ পরিশ্রমের তুলনায় অনেক বেশী। 69- স্কার একটি ক্ষুদ্র শিশুর স্পর্শ—একটি ক্ষুদ্র শিশুর মুখে বাবা- ডাক। দক্ষিণা যখন রন্ধনে যায় তখন আর সে তা যন্ত্রবৎ সম্পাদন