পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭৮ শবু পৰ আষাঢ়, ১৩২৫ নিদ্রিত শিশুর মৃদু হাসি টুকুতে যে কি প্রভেদ তা দক্ষিণা বলতে পারে না—কিন্তু সে-হাসি আর এসি এক নয়। এ কি দক্ষিণার পুত্র—না কোন দেবশিশু ! এ কি এই ক্ষুদ্র পৃথিবীর ক্ষুদ্র পিতা মাতার স্নেহাবদ্ধ সন্তান-না অনন্ত আকাশের কোন জীব! এ কি মর্ত্তের মানুষ-না স্বর্গের দেবতা! দক্ষিণার কেমন ভয় করতে লাগল। তাড়াতাড়ি ডাল—“প্রসাদ, প্রসাদ।” দক্ষিণার ডাকে যখন প্রসাদের ঘুম ভেঙে গেল তখন সে চারদিকে চেয়ে যেন প্রথম কিছুই বুঝতে পারল না, তারপর হঠাৎ তার মাকে দেখতে পেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে বলল-“জানিস্ মা ভারি একটা মজার স্বপ্ন দেখছিলাম। দক্ষিণা শিশুকে বক্ষে চেপে তার দুই গালে হাত বুলিয়ে বুঝল এ তারই প্রসাদ বটে—জিজ্ঞেস কল-“কি স্বপ্ন বাবা ?” “ভারি মজার স্বপ্ন মা! সে কি যেন কেমন-একদিন যেন আমি খেলছিলাম-সেখানে সবাই আছে মান অনঙ্গ বৈকোষ্ঠে। শশী তারক—সবাই। হঠাৎ দেখি কেউ নেই ! একলা আমি খালি দাঁড়িয়ে আছি—আর আমার সামনে মা খালি নীল—আর নীল-আর নীল। আর সেখানে থেকে কে যেন খালি ডাকছে-‘প্রসাদ প্রসাদ, আমি উত্তর দিতে যাই আর পারি না-হাঁটতে যাই হাঁটতেই পারি । আচ্ছা স্বপ্নে এ রকম হয় কেন মা? হাঁটতে গেলে হাঁটতে পারি না—কথা বলতে পারি না?” “কি জানি বাবা কেমন করে বলব স্বপ্নে কেন ওরকম হয়।” “তারপর আরও কত যেন কিসব আমার মনেই নেই। যেন সুন্দর সুন্দর দেশ—কত ঘর বাড়ী-ফুল ফল—কত যেন কি।