পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ম বর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা বই পড়া সে যাই কোন সভ্যতাই একেবারে নিরবিল নয় ; সকল সভ্যতার ভিতরই যথেষ্ট পাপ ও যথেষ্ট পাক আছে। নীতির দিক দিয়ে বিচার করতে গেলে সভ্যতা ও অসভ্যতার প্রভেদ যে আকাশপাতাল, এ কথা নির্ভয়ে বলা যায় না। তবে মানুষের কৃতীত্বের মাপে যাচাই করতে গেলে, দেখুঁতে পাওয়া যায় যে জ্ঞানে বিজ্ঞানে কাব্যকলায় শিল্পে বাণিজ্যে সভ্যজাতি ও অসভ্যজাতির মধ্যে সাত সমুদ্র তের নদীর ব্যবধান। জনৈক ফরাসী লেখক বলেছেন যে, যিনিই মানবের ইতিহাস চর্চা করেছেন, তিনিই জানেন যে মানুষকে ভাল করবার চেষ্টা বৃথা। এ হচ্ছে অবশ্য ক্ষুব্ধ মনের ক্রদ্ধ কথা, অতএব বেদবাক্য হিসেবে গ্র হ্য নয়। হাে’ক, এ কথার উত্তরে আমি বলি যে মানুষকে ভাল না করা যাক, ভদ্র করা যায়। পৃথিবীতে সুনীতির চাইতে সুরুচি কিছু কম দুর্লভ পদার্থ নয়। পুরাকালে সাহিত্যের চর্চা মানুষকে নীতিবান না করলেও রুচিবান করত। সমাজের পক্ষে এও একটা কম লাভ নয়। ধরে নেওয়া যাক সেকালের নাগরিক সমাজ কাব্যকে মনের বেশভূষার উপকরণ হিসেবে দেখত। তারা যে হিসাবে ওষ্ঠে যুবক ধারণ করতেন সেই হিসাবেই কণ্ঠে শ্লোক ধারণ করতেন। এ অনুমান নিতান্ত অমূলক নয়। সংস্কৃত ভাষায় একটি নাতি শ্লোকসংগ্রহ আছে, যার নাম “বিদগ্ধ মুখমণ্ডন”। ওরকম নামকরণের ফলে কাব্য অবশ্য রঙের কোঠায় পড়ে যায়। সে যাই হােক, নাগরিকদের বই পড়া যে একেবারে ভস্মে ঘি ঢালার সামিল ছিল না, এবং তাদের বৈদগ্ধ্য যে তাদের মনুষ্যত্ব অনেকটা রক্ষা করেছিল, একটি উদাহরণের সাহায্যে প্রমাণ দিচ্ছি। চরিত্রহীন অথচ কুশল নাগরিকদের সেকালে সাধারণ সংজ্ঞা ছিল “বিট”। এই বিটের একটি ছবি আমরা