পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১২ সবুজ পত্র শ্রবণ, ১৩২৫ কেউ গ্রাহ্য করবেন না, কেননা আমরা জাত হিসেবে সৌখীন নই— দ্বিতীয়ত অনেকে তা কুপরামর্শ মনে করবেন, কেননা আমাদের এখন ঠিক সখ করবার সময় নয়। আমাদের এই রােগ শােক দুঃখ দারিদ্র্যের দেশে জীবন ধারণ করাই যখন হয়েছে প্রধান সমস্যা, তখন সে জীবনকে সুন্দর করা মহৎ করার প্রস্তাব, অনেকের কাছেই নিরর্থক এবং সম্ভবত নির্মমও ঠেকবে। আমরা সাহিত্যের রস উপভােগ করতে আজ প্রস্তুত নই, কিন্তু শিক্ষার ফললাভের জন্য অামরা সকলেই উদ্বাহু। আমাদের বিশ্বাস, শিক্ষা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুই দূর করবে। এ আশা সম্ভবত দুরাশা- কিন্তু তাহলেও আমরা তা ত্যাগ করতে পারিনে, কেননা আমাদের উদ্ধারের অন্য কোনও সদুপায় আমরা চোখের সুমুখে দেখতে পাই নে। শিক্ষার মাহাত্মে আমিও বিশ্বাস করি, এবং যিনিই যা বলুন সাহিত্যচর্চা যে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। লােকে যে তা সন্দেহ করে, তার কারণ এ শিক্ষার ফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না, অর্থাৎ তার কোনও নগদ বাজারদর নেই। এই কারণেই ডিমােক্রাসি সাহিত্যের সার্থকতা বােঝে না, বােঝে শুধু অর্থের সার্থকতা। ডিমােক্রাসির গুরুরা চেয়েছিলেন সকলকে সমান করতে, কিন্তু তাদের শিষ্যেরা তাদের কথা উল্টো বুঝে প্রতিজনেই হতে চায় বড়মানুষ। একটি বিশিষ্ট অভিজাত সভ্যতার উত্তরাধিকারী হয়েও, ইংরাজি সভ্যতার সংস্পর্শে এসে আমরা ডিমােক্রাসীর গুণগুলি আয়ত্ত করতে না পারি, তার দোষগুলি আত্মসাৎ করছি। এর কারও স্পষ্ট। ব্যাধিই সংক্রামক,-স্বাস্থ্য নয়। আমাদের শিক্ষিত সমাজের লােলুপ দৃষ্টি আজ অর্থের উপরেই পড়ে রয়েছে, সুতরাং সাহিত্যচর্চার সুফল