পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ম বং, চতুর্থ সংখ্যা বই পড়া সম্বন্ধে আমরা অনেকেই সন্দিহান। যারা হাজারখানা Law-report কেননা, তারা একখানা কাব্যগ্রন্থও কিনতে প্রস্তুত নন, কেননা তাতে ব্যবসার কোনও সুসার নেই। নজির বা আউড়ে কবিতা আবৃত্তি কলে মামলা যে দাড়িয়ে হারতে হবে—সেত জানা কথা। কিন্তু যে কথা জলে শােনে না—তার যে কোনও মূল্য নেই, এইটেই হচ্ছে পেশা- দারদের মহাভ্রান্তি। জ্ঞানের ভাণ্ডার যে ধনের ভাণ্ডার নয়, এ সত্য ত প্রত্যক্ষ কিন্তু সমান প্রত্যক্ষ না হলেও এও সমান সত্য নয় যে, এ যুগে যে জাতির জ্ঞানের শুন্য, সে জাতির ভাণ্ডার ধনের ঊড়েও ভবানী। তারপর যে জাতি মনে বড় নয়, সে জাতি জ্ঞানেও বড় নয়—কেননা ধনের সৃষ্টি যেমন জ্ঞানসাপেক্ষ, তেমনি জ্ঞানের সৃষ্টিও মনসাপেক্ষ। এবং মানুষের মনকে সবল সচল সরাগ ও সমৃদ্ধ করবার ভার আজকের দিনে সাহিত্যের উপর ন্যস্ত হয়েছে। কেননা মানুষের দর্শন বিজ্ঞান ধৰ্ম্ম নীতি অনুরাগ বিরাগ আশা নৈরাশ্য, তার অন্তরের স্বপ্ন ও সত্য—এই সকলের সমবায়ে সাহিত্যের জন্ম। অপরাপর শাস্ত্রের ভিতর যা আছে, সে সব হচ্ছে মানুষের মনের ভগ্নাংশ; তার পুরাে মনটার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় শুধু সাহিত্যে। দর্শন বিজ্ঞান ইত্যাদি সব হচ্ছে মন-গঙ্গার তােলা জল—তার পূর্ণ স্রোত আবহমান কাল সাহিত্যের ভিতরই সােল্লাসে সবেগে বয়ে চলেছে; এবং সেই গঙ্গাতে অবগাহন করেই আমরা আমাদের সকল পাপ হতে মুক্ত অতএব দাড়াল এই যে, আমাদের বই পড়তেই হবে—কেনন বইপড়া ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর নেই। ধৰ্ম্মের চর্চা চাই কি মন্দিরে করা চলে, দর্শনের চর্চা গুহায়, নীতির চর্চা ঘরে, এবং ২৯