পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ, ১৩৫ রঙের নিশান উড়িয়ে, এর সত্যতা প্রতিপন্ন করার জন্য বােধহয় প্রমাণের দরকার নেই। কারণ এ সব আমাদের দেখা কথা qofte Facts. সত্ত্বেও যদি কেউ উপরের কথায় আপত্তি তােলেন, তবে এই বললেই যথেষ্ট হবে যে, তিনি নিতান্তই একজন তার্কিক—আর কিছু নম্। মানুষের সম্বন্ধে এই কথাটা যেমন সত্য, একটা জাতি বা সমাজের পক্ষেও এটা ঠিক তেমনি সত্য। এই যে আমরা বাঙালী জাতি--আমরা আর্য না অনাৰ্য, মঙ্গোল না দ্রাবিড়–না সবগুলাে মিশিয়ে একটা কিছু—সে সম্বন্ধে কোন থিওরি খাড়া করুবার অধিকার আছে মাত্র এক নৃতত্ত্ববিদের। কিন্তু এমন যদি ব্রাহ্মণ আজ বাংলাদেশে থাকেন, যিনি বুক ঠুকে সাহস করে বলতে পারেন যে, তার ধমনীর প্রত্যেক বিন্দু শােণিত আৰ্য-শশাণিত—তবে সেই বাঙালী ব্রাহ্মণের সঙ্গে সেকালের আৰ্য ব্রাহ্মণ ঋষ্যশৃঙ্গের যে মিলটা পাওয়া যাবে, সেটা হচ্ছে এই যে, তারা দুজনেই মানুষ। কিন্তু যেহেতু মানুষ গরু গাধা নয়, সেই জন্যে আজকার এই মানুষ আর সে দিনের সেই মানুষের মধ্যে ভিতরের দিকটায় একটা প্রকাণ্ড অমিল দাঁড়িয়ে গেছে সে এমনি অমিল যে এদের এক জনের কথা আর এক জনের বুঝতে হলে একছত্র কণার পঞ্চাশ পত্র টীকা না হলে চলে না। পাঁচ দু'শ বছর আগেকার বাঙালী আর আজকের বাঙালী এক নয়। পাঁচ ছ’ শ বছর আগের বাঙালী চণ্ডীদাস বিদ্যাপতির জন্ম দিয়েছে। আর আজকের আমরা যে চণ্ডীদাস বা বিদ্যাপতি নই, তা সাময়িক পত্রিকার কোন কোন কবিতাতে স্পষ্ট করে লেখা থাকে দেখতে পাওয়া যায়—যার চোখ আছে তিনিই সেটা পড়তে পারেন। এখন