পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব, চতুর্থ সংখ্যা সাহিত্যের কাতরক্ষা এই যে একটা মানুষের বা সমাজের বা জাতির পরিবর্তন—ত কেন হয়, বা কেমন করে হয়, এ প্রবন্ধে সেটা আলোচনা করবার জরকার নেই। এ প্রবন্ধে এইটুকু বলাই যথেষ্ট যে এ-পরিবর্তন ঘটে - এ সম্বন্ধে আর কোন ভুল নেই। নদীর মুখ বন্ধ হয়ে গেলে তার স্রোতহীন জল শৈবালদলে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তখন আর সেখানে কল কল ছল ছল তান ওঠে না,- ওঠে শুধু মণ্ডুককুলের ঐক্যতান সঙ্গীত। এত গেল নদীর কথা। তেমনি মানুষের জীবনের যে-কোন রসকে আবদ্ধ করে রাখলে তা কিছু দিনের মধ্যেই হয়ে ওঠে তাড়ি। আর সে তাড়ি পান করে মানুষে যে লীলাখেলা করে, তা আর যাই হােক আধ্যাত্মিক মােটেই নয়। সুতরাং কোন এক যুগের মানুষের অনুভূত কোন এক বিশেষ রসকে সনাতন করে তােলায় মানুষের বিপদ আছে। তাই এমন যে বৈষ্ণব- ধর্ম—সে বৈষ্ণবধৰ্ম্মের সতত্ত্বও মেতে গিয়ে, হয়ে দাড়াল আদিরস। আর এই আদিরসের রঙে রঙীন হয়ে বৈষ্ণব-ধর্মের ইতিহাসের পৃষ্ঠায় যে ছবি ফুটে উঠল, তার রস হাস্যও নয় করুণও নয়—তার রস বীভৎস কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মানুষের কোন বিশেষ অনুভূতিকে মানুষের পক্ষে সনাতন করে তুলতে কেউ-ই পারেন না—কারণ তা সনাতন করে তুলতে পারার অর্থ ভগবানের এ সৃষ্টি-লীলার অবসান। তাই স্বয়ং বুদ্ধদেব তা পারেন নি—স্বয়ং খৃষ্টদেবও কৃতকার্য হন নি। প্রমাণ—এই দুই মহা পুরুষের আজকালকার শিষ্যেরা। সুতরাং যখন মানুষের, সমাজের, জাতির পরিবর্তন হচ্ছে— মানুষের জীবন-দেবতার লীলা-বিলাসের পরিবর্তন হচ্ছে-যুগে যুগে তার অন্তরে নব নব আকর্ষণ সত্য হয়ে উঠে আনন্দের ডাক তাকে