পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব, চতুর্থ সংখ্যা সাহিত্যের জাতরক্ষা সত্য খুঁজে পেয়েছেন-বীণাপাণির বীণার তানে স্বাদের মন মজেছে- তারা যেন সে বীণাপাণির মন্দিরে প্রবেশ করেন—আপনার জীবন দেবতার সত্য অর্ঘ্য নিয়ে, কোন অতীতকে নিয়ে নয়—তা সে অতীত যত বড়ই হােক, যত মহানই হােক, যত লােভনীয়ই থােক। সাহি- ত্যিক জীবনে সফলতা লাভের একই পন্থা-আপনার অন্তরের সত্য। সাহিত্যিকের আপনার জীবনের সত্যের মধ্যেই সেই ফুলগুলি ফুটে ওঠে—যে ফুল দিয়ে বীণাপাণি নিভৃতে বসে তার জন্যে বিজয়মাল্য রচনা করেন। এ পথের পথিকের আর কোন পন্থা নেই। শুধু এ পথেই বা বলি কেন—কোন পথের পথিকেরই অন্য পন্থা নেই- নান্যঃ পন্থা বিদ্যতেহয়নায়। আজ বাংলার মানুষকে আহ্বান করে আমরা বছি যে, তারা যেন বাঙালীর মিথ্যা জাতীয়তার নামে আপনার ভিতরের মানুষকে খাটো না করেন। তারা যেন না ভোলেন যে, বাহিরের জগতে আমরা বাঙালী কিন্তু মনের জগতে আমরা মানুষ। সামাজিক জীবনে ত মানুষ আপনার চারদিকে গণ্ডী টাতে বাধ্য-নইলে সংসার চলে না। কিন্তু মনের জগতে তার অসীম স্বাধীনতা। মনের জগতের এই স্বাধীনতার সংকোচ যেন তারা কোন দিনই না ঘটান। দেশভেদে, জাতিভেদে, আচারভেদে, বর্ণভেদ, ধৰ্ম্মভেদেও মানুষে মানুষে বন্দ্বের অন্ত নেই—কিন্তু আমরা এই মনের জগত চিরকাল উন্মুক্ত রেখে যেন আশা করতে পারি যে বাহিরের সহস্র অমিল সত্বেও বিশ্ববাসীর একদিন এখানে মিলন হবে। শ্রীসুরেশচন্দ্র চক্রবর্তী।