সবুজ পত্র শ্রাবণ, ১৩৫ -“বীরবলের কথাটা একবার উল্টে নেওয়া যাক। তাহলে দাঁড়ায় এই যে-“ছােট গল্প হচ্ছে সেই পদার্থ, যা প্রথমত ছােট নয়, দ্বিতীয়ত গল্প নয়। তা যদি হয় ত, Kant-এর শুদ্ধ বুদ্ধির সুবিচারও ছােট গল্প।” এ কথা শুনে আমরা অবশ্য হেসে উঠলুম, কিন্তু সুপ্রসন্ন আরও অপ্রসন্ন হয়ে বললেন-“তােমার যে রকম বুদ্ধি তাতে তোমার বাঙলা লেখক হওয়া উচিত। Nonsense-কে উল্টে নিলেই যে তা Sense হয় এ তত্ত্ব কোন্ লজিকে পেয়েছে, গ্রীক না জাৰ্মাণ ? ছোেট শব্দের নিজের কোনও অর্থ নেই, ও হচ্ছে একটা আপেক্ষিক শব্দ, অন্য কিছুর সঙ্গে মেপে না নিলে ওর মানে পাওয়া যায় না।” —“তাহলে War and Peace-এর চেহারা চোখের সুমুখে রাখলে Anna Karenina-কে ছোট গল্প বলতে হবে। আর রাজসিংহের পাশে বসিয়ে দিলেই বিষবৃক্ষ ছােট গল্প হয়ে যাবে। একই কথার যে আলাদা আলাদা ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা মানে হয়, এইটে ভুলে গেলেই মানুষের মাথা ঘুলিয়ে যায়। গণিতে “ছােট” শব্দ relative ও লজিকে Correlative; কিন্তু সাহিত্যে তা positive.” —“তাহলে তােমার মতে ছােট গল্পের ঠিক মাপটা কি ?” -এক ফৰ্ম্মা। যার দেহ এক ফৰ্ম্মায় আঁটে না, তা বড় গল্প হতে পারে কিন্তু তা ছােট গল্প নয়।” —“তােমার কথা গ্রাহ্য করবার পক্ষে বাধ্য হচ্ছে এই, যে ফর্মাও সব এক মাপের নয়। ওর ভিতরও আট-পেজি, বায়ো-পেলি, যােল- পেলি আছে।”
পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।