পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫ম বর্ষ, প্রথম সংখ্যা
নব বিদ্যালয়
২১

বিরুদ্ধে দাঁড়ান যায় না—এ কথা বিশ্বাস করা কঠিন, যদিচ অনেক বুদ্ধিমান লোকের মত তাই। বেলজিয়ামের উপর জর্ম্মাণী যে নিষ্ঠুুর ও প্রচণ্ড আঘাত করেছে, তাতে প্রফেসার ফারিয়ার উক্ত বিশ্বাস ঘা খেয়েছে — কিন্তু ভাঙ্গা দূূরে যাক, টলেও নি। যে সময়ে জর্ম্মাণরা সমগ্র বেলজিয়ামক্ষে পদদলিত পীড়িত ও বিধবস্ত কর্‌ছিল, সেই সময়ে তিনি জেনেভা-সহরে এই কথা বলেন–

“এ দুর্দ্দিনেও মানবসভ্যতার প্রতি আমাদের আস্থা এবং শ্রদ্ধা সমান অটল রয়েছে। আমি সর্ব্বান্তঃকরণে বিশ্বাস করি যে,ব্যক্তির উপরে, জাতির উপরেও, মানবাত্মা বলে একটি পদার্থ আছে। এই যুদ্ধের পৈশাচিক নিষ্ঠুরতা ও বীভৎস অত্যাচারেও মানুষের আত্মার প্রদীপ কখনও নির্ব্বাপিত হবে না; সে অক্ষয় প্রদীপের চিরর্দ্ধ্বমান শিখা যুগের পর যুগে যত উর্দ্ধে আরোহণ করবে, বিশ্ব মানবের জীবনের পথ তত আলোকিত হয়ে উঠবে”।

এর পর বোধহয় এ কথা স্পষ্ট করে বলবার দরকার নেই যে, প্রফেসার ফারিয়া একজন ঘোর Idealist; কিন্তু তার থেকে যদি কেউ মনে করেন যে তিনি একজন খেয়ালি লোক, এবং তাঁর স্কুল হচ্ছে একটি খামখেয়ালি ব্যাপার,— তাহলে তিনি নিতান্তই ভুল কর্‌বেন। এই ছোট্ট বইখানির ভিতর তিনি শিক্ষা সম্বন্ধে যে অগাধ জ্ঞান ও অসাধারণ অভিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন, তা দেখে অবাক হয়ে যেতে হয়। শিক্ষা জিনিসটে তিনি কবির চোখ দিয়েও দেখেন নি, দার্শনিকের চোখে দিয়েও নয়। সনাতন শিক্ষাপদ্ধতির বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগই এই যে, সে পদ্ধতি বৈজ্ঞানিক নয় —ও হচ্ছে আসলে একটি আন্দাজি ব্যাপার। প্রচলিত শিক্ষা, শিশু ও বালকের শরীর মন ও