পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, প্রথম সং নব-বিদ্যালয় একটু ফাক পাই, সেইখানেই স্কুল বসিয়ে দিই। গাছ পোতবার সময়ও আমরা এর চাইতে ঢের বেশি সতর্ক হই ; যেন গাছের জীবন মানুষের জীবনের চাইতে বেশি মূল্যবান। প্রফেসার ফারিয়ার শিক্ষা-বিজ্ঞানের প্রথম সূত্র এই যে, স্কুলের উপযুক্ত স্থান হচ্ছে পল্লীগ্রাম, সহর নয়। সহর নামক ইটের পর্বতের গুহায় আজন্ম বাস করে মানবসন্তান যে, দেহ মন ও চরিত্রে পূর্ণ-শ্রী পূর্ণ-শক্তি লাভ করবার সুযােগ পায় না,-এ কথা আমরা যােল- আনা মানলেও অনেকে এক কড়াও মানে না। খােলা আকাশের তলায় পরিষ্কার আলো ও বাতাসের মধ্যে বাস করাই যে ছােট ছেলের শরীরের পক্ষে স্বাস্থ্যকর ও মনের পক্ষে শ্রেয়স্কর, এ কথা বুঝতে যাঁদের দেরি লাগে, তাদের জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, তারা কি স্বচ্ছন্দচিত্তে তাঁদের ছেলেদের খনির গর্ভে মানুষ হতে দিতে স্বীকৃত হবেন-হোক সে খনি বিজুলি বাতিতে আলােকিত আর বিজুলি পাখায় ব্যজনিত ? ছােট ছেলের পক্ষে সহর একটি কারাগার মাত্র, সে কারাগারে আমরা যে তাদের বন্ধ করে রাখতে কুণ্ঠিত হই নে, তার কারণ আমাদের শিক্ষা-পদ্ধতি হচ্ছে আসলে জেলের পদ্ধতি। সচরাচর স্কুল যে জেলখানার আদর্শেই গঠিত হয়, এ দুয়ের সাদৃশ্যের প্রতি নজর দিলে সকলেই তা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন। এই জেলখানা থেকে ছেলেদের উদ্ধার করার মানসেই ইউরোপে এই সব নববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। স্বাধীনতাই হচ্ছে এই সব স্কুলের মূলমন্ত্র ; কেননা এদের কর্তৃপক্ষের এই মহা সত্যের আবিষ্কার করেছেন যে, অবাধ স্বাধীনতার মধ্যেই মানুষ তার মনুষ্যত্ব লাভ করে, অর্থাৎ ঐ অবস্থাতেই তার দেহ মন ও চরিত্রের পূর্ণ অভিব্যক্তি হয় ; এবং বলা