পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম , প্রথম শাখা নব-বিদ্যালয় ২৫ এ হবে যে, শিক্ষার এই নব-পন্থীদের মতে সহুরে স্কুলে তাদের পতি অনুসারে শিক্ষা দেওয়া একেবারেই অসম্ভব; সুতরাং স্কুলের স্বস্থান হচ্ছে সহরের বাইরে। স্কুলের অস্তিানা সহরের বাইরে হলেও বহুদূরে হওয়া উচিত নয়। এই হচ্ছে প্রফেসার ফারিয়ার মত। তঁার স্কুল ছিল ব্রাসেলস থেকে পঞ্চাশ মিনিটের রেলের পথ। স্কুল যে একটি বড় সহরের এক ঘণ্টার রেলপথের বাইরে হওয়া উচিত নয়—এ বিষয়ে তিনি দৃঢ়মত। অবশ্য একটি নূতন কথা, সুতরাং এ বিষয়ে তার কি বক্তব্য আছে শোনা যাক। তিনি বলেন- “লােকালয়ের বাইরে স্কুল স্থাপন করার উদ্দেশ্য এ নয় যে, আমরা আমাদের ছেলেদের একটা বড় সহরের সংস্পর্শ থেকে একেবারে দূরে রাখতে চাই কিম্বা রাজধানী নামক সভ্যতার কেন্দ্রস্থলে মানুষের হৃদয়মনের শিক্ষার জন্য যে অতুল ঐশ্বৰ্য্য সঞ্চিত রয়েছে, টলষ্টয়ের মত তা প্রত্যাখ্যান করতে চাই। এ কথাটা আমি খুব স্পষ্ট করে খুব উচু গলায় বলতে চাই যে, এই প্রকৃতির কোলে ফিরে আসার অর্থ আমাদের কাছে এ নয় যে, আমরা বনবাসের কোনরূপ অপূৰ্ব্ব মাহাত্ম্য কিম্বা দৈবী-শক্তিতে বিশ্বাস করি। সেরকম অদ্ভুত বিশ্বাস যে আমাদের নেই—এ কথাটা পরিষ্কার করে বলা আবশ্যক, কেননা প্রায়ই দেখতে পাই যে, এমন লােক ঢের আছেন যাদের ধারণা যে আমাদের নববিদ্যালয়ের প্রধান গুণই এই যে, আমরা সহরের সয়তানের বেড়াজাল ছিড়ে পালিয়ে এসেছি। লােকালয়-বহিভূত মাঠের মধ্যে স্কুল প্রতিষ্ঠা করবার সুফল যে কি, তা পূর্বেই বলেছি; কিন্তু সহরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখবার সুফল থেকেও আমরা ছেলেদের বঞ্চিত করতে চাই নে।”